হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইমাম জাফর সাদিক (আ.) বলেছেন,
مَن تَعَلَّمَ العِلمَ و َعَمِلَ بِهِ و َعَلَّمَ لِلّهِ دُعِىَ فى مَلَكُوتِ السَّماواتِ عَظيما فَقيلَ: تَعَلَّمَ لِلّهِ و َعَمِلَ لِلّهِ و َعَلَّمَ لِلّهِ
যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ইলম (জ্ঞান) অর্জন করে, সে অনুযায়ী আমল করে এবং অন্যকে তা শিক্ষা দেয়, তাকে আসমানের মালাকূতে মহান মর্যাদায় সম্মানিত করা হয়। তখন ঘোষণা করা হয়:
“সে আল্লাহর (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য শিখেছে, আল্লাহর জন্য আমল করেছে এবং আল্লাহর জন্য শিক্ষা দিয়েছে।”
[সূত্র: আয-যারিয়া ইলা হাফিয আশ-শারিয়া (শারহে উসুলে কাফি), খণ্ড- ১, পৃষ্ঠা- ৫৬]
প্রয়োজনীয় বিশ্লেষণ: এই হাদিসে ইমাম সাদিক (আ.) ‘হক্কানি আলেম’ এর তিনটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেছেন:
১. ইখলাসের সাথে ইলম অর্জন:
- জ্ঞানার্জনের একমাত্র উদ্দেশ্য কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি,
- দুনিয়াবি স্বার্থ (প্রশংসা, পদমর্যাদা, অর্থলাভ) থেকে মুক্ত থাকা।
২. অর্জিত জ্ঞানের বাস্তবায়ন:
- শুধু তত্ত্বজ্ঞান নয়, বরং তা নিজ জীবনে প্রয়োগ করা,
- 'আলেমে বে-আমল' (আমল বিহীন আলেম) এর বিপদ থেকে সতর্কতা।
৩. ইলমের যথাযথ প্রচার:
- গাইরুল্লাহর ভয় বা লোভ নয়—বরং দ্বীনকে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিক্ষাদান,
- নবী (সা.)-এর প্রতি নির্দেশ وَبَلِّغُوا عَنِّي وَلَوْ آيَةً (আমার পক্ষ থেকে পৌঁছে দাও, যদি তা এক আয়াতও হয়) এর বাস্তবায়ন।
প্রয়োজনীয় পরামর্শ:
- আমাদের মাদরাসা ও ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এই তিন স্তরের সমন্বয় জরুরি।
- প্রতিটি দারস, ওয়াজ বা লেখালেখিতে নিয়ত পরিশুদ্ধ করা আবশ্যক।
- ‘ইলম বিনা আমল’ সমাজে ধর্মীয় সংকট সৃষ্টি করে—এটি রোধে সচেতনতা প্রয়োজন।
বাস্তব প্রয়োগ:
এ হাদিসের আলোকে প্রতিটি মুসলিমের উচিত:
- নিজের নিয়ত পরীক্ষা করা (কেন জ্ঞান চাইছি?)
- ছোট থেকেই আমল-জ্ঞানের সমন্বয় গড়ে তোলা
- সামাজিক মাধ্যমসহ সব ক্ষেত্রে দায়িত্বশীলভাবে ইলম পৌঁছে দেওয়া
এই হাদিসটি বর্তমান সময়ে “হক্ব ও বাতিলের মিশ্রণ” থেকে সতর্ক হওয়ারও উপদেশ দেয়—যেখানে অনেক জ্ঞানী ব্যক্তিও প্রভাব বা স্বার্থের কাছে নতি স্বীকার করেন। আল্লাহ আমাদেরকে খালেস নিয়তে ইলম অর্জন, আমল ও তা প্রচারের তাওফিক দিন। আমিন।
আপনার কমেন্ট