সোমবার ৫ মে ২০২৫ - ২২:৩৯
ফিলিস্তিন বর্তমান বিশ্ব ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু

সিস্তান ও বেলুচিস্তানের জনগণের প্রতিনিধি মজলিসে খোবরেগানে রাহবারিতে (ইরানের নেতৃত্ব পরিষদ), মাওলানা আলী আহমাদ সালামী ফিলিস্তিনের বিষয়টিকে আজকের বিশ্ব ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, মাওলানা সালামী তাঁর বক্তব্যে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইহুদি ষড়যন্ত্রের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন: পবিত্র কুরআনের কিছু আয়াত ইঙ্গিত দেয় যে, ইহুদিরা মুসলমানদের ইসলাম ও কুরআনের প্রতি বিমুখ করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। এর একটি দৃষ্টান্ত হলো—উহুদের যুদ্ধে প্রায় তিনশো মুজাহিদকে ফিরিয়ে আনা, যা ইতিহাসে ইহুদিদের ষড়যন্ত্র হিসেবেই বিবেচিত, যার উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের জিহাদ থেকে নিরুৎসাহিত করা।

তিনি আরও বলেন: ক্রুসেড যুদ্ধে, যা প্রায় ১৯৫ বছর স্থায়ী হয়েছিল, বাহ্যিকভাবে খ্রিস্টানরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেও, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ ছিল ইহুদিদের হাতে। দশম হিজরি শতাব্দীতে, যখন উসমানি খিলাফত, ইরানে সাফাভী শাসক এবং উপমহাদেশে মোগল শাসক সকলে মুসলমান ছিলেন এবং ইসলামী চেতনার অধিকারী ছিলেন—তখন মুসলিম ঐক্যের এক সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু ইহুদিরা সাফাভী ও উসমানিদের মধ্যে ধর্মীয় যুদ্ধ এবং আরবদের সঙ্গে উসমানিদের জাতিগত বিরোধ তৈরি করে ঐক্য রোধ করে।

মাওলানা সালামী সমসাময়িক ইতিহাসে আরও কিছু ইহুদি ও জায়নবাদী ষড়যন্ত্রের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন: উপমহাদেশে যুদ্ধের পর অঞ্চলটি বিভক্ত হয়ে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠিত হয়। পরিকল্পনা ছিল, মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চল পাকিস্তানের অংশ হবে এবং হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা ভারতের। কিন্তু ব্রিটিশ শাসকের শীর্ষস্থানীয় উপদেষ্টা, যিনি একজন ইহুদি ছিলেন, পাকিস্তানকে ইসলামী রাষ্ট্র হিসেবে গঠিত হতে বাধা হিসেবে দেখেন, কারণ তা ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে মিলিত হয়ে উপনিবেশবাদীদের অবস্থান দুর্বল করতে পারত। তাই 'কাশ্মীর' ইস্যু তৈরি করা হয়, যার ফলে গত ৭০ বছরে এই দুই দেশের মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে।

তিনি আরও বলেন: ১৯৪৮ সালে, কথিত 'হলোকাস্টে' ৬ মিলিয়ন ইহুদি হত্যার অজুহাতে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইহুদিদের ফিলিস্তিনে এনে জমি দখল করানো হয়। ইতিহাস এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে না এবং যদি সত্যও হয়, তবুও তা মুসলমানরা করেনি। এটি ছিল ব্রিটিশ ও জায়নিস্ট ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, যারা একটি ভুয়া রাষ্ট্র তৈরি করে ফিলিস্তিনে অগণিত বিপর্যয় ডেকে এনেছে।

মাওলানা সালামী শেষদিকে বলেন: ফিলিস্তিন ইস্যু বিশ্ব ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর একটি। দুঃখজনকভাবে, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এবং অধিকাংশ মুসলিম দেশ এই অবিচারের বিরুদ্ধে নীরব থেকেছে—শুধু ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এবং ইয়েমেন সরকারই শতভাগভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে থেকেছে। আমরা গর্বিত যে, আমাদের ইসলামি শাসনব্যবস্থা সব ধরনের চাপ ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও কখনোই নিপীড়িত ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে পিছপা হয়নি।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha