হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইমাম খোমেনী (রহ.) তাঁর গ্রন্থ ‘জিহাদে আকবর’-এ ধর্মীয় ছাত্রদের জন্য মূল্যবান কিছু উপদেশ প্রদান করেছেন, যা ধারাবাহিকভাবে আপনাদের খেদমতে উপস্থাপন করা হবে:
তালাবাদের (ধর্মীয় শিক্ষার্থী) আচরণে সামাজিক প্রভাব এবং সমাজে তার প্রভাব
তালাবাদের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের দায়িত্বের তুলনায় ভিন্ন ও অধিক গুরুত্বপূর্ণ। এমন অনেক বিষয় আছে যা সাধারণ মানুষের জন্য বৈধ (মুবাহ), কিন্তু আলেমদের জন্য তা অনুচিত, এমনকি হারাম পর্যন্ত হতে পারে।
মানুষ এমনকি মুবাহ কাজও আলেমদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে না—অশালীন ও হারাম কাজ তো অনেক দূরের কথা। আল্লাহ না করুন, যদি কোনো আলেম এমন আচরণ করেন, তা মানুষের মনে ইসলাম এবং আলেম সমাজ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করে।
সবচেয়ে বড় কষ্টের বিষয় হলো—
যদি মানুষ আলেমদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত আচরণের ব্যত্যয় দেখে, তারা শুধু সেই ব্যক্তির ওপর নয়, বরং পুরো ধর্ম ও আলেম সমাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
হায়! যদি মানুষ কেবল একজন ব্যক্তির প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করত! কিন্তু যখন তারা কোনো আলেমের অশোভন আচরণ দেখে, তখন তারা তা বিশ্লেষণ করে না। যেমন—বাজারে অসাধু ব্যবসায়ী বা অফিসে দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা থাকলেও মানুষ কেবল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে। কিন্তু যদি একজন আলেম অন্যায় করে, তখন বলা হয়- “মোল্লারাই খারাপ”।
এ কারণে আহলে ইলমদের দায়িত্ব অত্যন্ত ভারী এবং তাদের জবাবদিহিতা সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি।
যদি আল-কাফি বা ওয়াসায়েলুশ শিয়া’র মতো হাদীসগ্রন্থে আলেমদের দায়িত্বসংক্রান্ত অধ্যায়গুলো দেখা হয়, তাহলে বোঝা যায়—আহলে ইলমের জন্য কত কঠিন ও গুরুতর দায়িত্ব নির্ধারিত হয়েছে।
একটি হাদীসে এসেছে: যখন প্রাণ গলার কাছে পৌঁছে যায়, তখন একজন আলেমের তওবা আর কবুল হয় না; কারণ আল্লাহ কেবল অজ্ঞদের তওবা মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কবুল করেন।
আরেকটি হাদীসে বলা হয়েছে:
“একজন অজ্ঞের সত্তরটি গুনাহ মাফ করা হয়, তবেই একজন আলেমের একটি গুনাহ মাফ হয়।”
কারণ আলেমের গুনাহ ইসলাম ও মুসলিম সমাজের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
অজ্ঞ যদি কোনো গুনাহ করে, সে কেবল নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কিন্তু একজন আলেম যদি বিপথগামী হয় কিংবা কোনো অন্যায় কাজে লিপ্ত হয়, তবে সে কেবল নিজের ক্ষতি করে না; বরং গোটা ইসলামী সমাজ ও আলেম সমাজকেও ক্ষতির সম্মুখীন করে।
আপনার কমেন্ট