বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫ - ১৯:৪০
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরবাঈন উপলক্ষে দাওয়াত কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা" শীর্ষক মতবিনিময় 

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরবাঈন উপলক্ষে দাওয়াত কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা" শীর্ষক মতবিনিময় 

আরবাঈনের মুবাল্লিগদের জন্য ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সম্পৃক্ততা নিষিদ্ধ

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আরবাঈন উপলক্ষে দাওয়াত কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা" শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা হাওজা ইলমিয়ার ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেম ও দাঈগণ অংশগ্রহণ করেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, এই সভায় উপস্থিত ছিলেন হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন সাইয়্যেদ মুফিদ হোসেইনি কোহসারি (আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-পরিচালক), হুজ্জাতুল ইসলাম রেজা রুস্তামি (মিডিয়া ও ভার্চুয়াল স্পেস সেন্টারের প্রধান) এবং আরও অনেকে।

এই সভার মূল উদ্দেশ্য ছিল আরবাঈন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক দাওয়াত কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করার পথ খুঁজে বের করা।

রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা:

সভায় হুজ্জাতুল ইসলাম সাদেকী, এক আন্তর্জাতিক মুবাল্লিগ সভায়, বলেন: “আরবাঈনের মুবাল্লিগদের জন্য ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি থেকে সম্পূর্ণভাবে বিরত থাকা জরুরি। যেমন আমরা চাই না কেউ আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করুক, তেমনি ইরাকিরাও তা পছন্দ করে না।”

তিনি রাজনৈতিক বিষয়কে দুটি ভাগে ভাগ করেন:

১. ইরাকের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয় — যেখানে হস্তক্ষেপ নিষিদ্ধ।

২. সর্বজনীন রাজনৈতিক ইস্যু — যেমন গাজা, হিজবুল্লাহ ও প্রতিরোধ ফ্রন্ট।

তিনটি মূল দিক:

ইরাকের ভৌগোলিক বাস্তবতা

আরবাঈনের মাহাত্ম্য

মুবাল্লিগদের বৈশিষ্ট্য


তিনি বলেন, ইরাকি জনগণের কাছে আলেমদের বিশেষ সম্মান আছে, যা একটি সুযোগ। মুবাল্লিগগণ তিনটি পন্থায় সক্রিয় হতে পারেন:

মাঠে ও জনগণের সঙ্গে সরাসরি কাজ করা

আধুনিক দাওয়াত পদ্ধতি ব্যবহার

আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই সেবামূলক কাজে অংশ নেওয়া

মিডিয়া কার্যক্রমের গুরুত্বও তিনি বিশেষভাবে তুলে ধরেন।

আক্রমণাত্মক দাওয়াতের প্রস্তাব:

হুজ্জাতুল ইসলাম কালাতে, আমিরবায়ান ইনস্টিটিউটের একজন সদস্য বলেন: “আমাদের দাওয়াত পদ্ধতিকে আক্রমণাত্মক হতে হবে। ইসলামি বিপ্লব পশ্চিমা সভ্যতাকে সরিয়ে দিয়েছে এবং একটি নতুন সভ্যতা গড়ে তুলছে।”

তিনি বলেন, আমিরবায়ান ইনস্টিটিউট বিভিন্ন ভাষায় বক্তৃতা ও দাওয়াত কনটেন্ট তৈরির জন্য গবেষণা দল প্রস্তুত করতে সক্ষম।

প্রাদেশিক উদ্যোগ:

হুজ্জাতুল ইসলাম দাবিরীজাদেহ, খুজেস্তানের হাওজা ইলমিয়ার আন্তর্জাতিক বিভাগের সহ-পরিচালক, জানান: ইতোমধ্যে ৩০০ ভাষাজ্ঞানসম্পন্ন মুবাল্লিগ চিহ্নিত করা হয়েছে।

রমজান মাসে ১৬০ জন মুবাল্লিগকে ৭টি প্রদেশে পাঠানো হয়।

মুবাল্লিগদের চিন্তাভাবনার খোরাক নিশ্চিত করতে হবে, যেন তারা সমসাময়িক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেন।

তিনি আরও বলেন: “আরবাঈনের দাওয়াত শেষ হওয়ার পর এর ফলাফল মূল্যায়ন করতে হবে এবং সন্দেহ-সংশয় চিহ্নিত করে সমাধান দিতে হবে। শহীদদের স্মরণে এবং প্রতিরোধ ফ্রন্টের বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে।”

দাওয়াতের ধরন:

হুজ্জাতুল ইসলাম ফতেহ আলীজাদে, কোম হাওজার দাওয়াত বিভাগের পরিচালক বলেন: আরবাঈনের দাওয়াতের ধরন আলাদা, এবং তা স্বীকার করাই শ্রেয়।

পূর্ব অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে শক্তি ও দুর্বলতা চিহ্নিত করতে হবে।

শাবান মাসের প্রচার কার্যক্রমে ভিডিওচিত্র ধারণ করা হয়েছে, যা আরবাঈনের ক্ষেত্রেও অনুসরণযোগ্য।

তিনি বলেন: “ফেরকাগত (সম্প্রদায়গত) বিতর্ক এড়ানো উচিত, যা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। গত বছর ৯০০ জন দাঈ রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন, যাদের মধ্যে ৭০০ জন প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং ২২০ জন পাঠানো হয়েছিল। এ বছর ৫০০ জনের প্রশিক্ষণ ও পাঠানোর প্রস্তুতি আছে।”

ভাষা ও প্রশিক্ষণের গুরুত্ব:

হুজ্জাতুল ইসলাম মাহান বলেন: আন্তর্জাতিক দাওয়াতের গুরুত্ব বিবেচনায় বছরজুড়ে আলোচনার টেবিল চালু রাখা উচিত।

মুখোমুখি আলাপে দাঈদের উচিত শ্রোতার মানসিক জট খুলে দেওয়া।

গুণগত মানকে প্রাধান্য দিতে হবে, সংখ্যার চেয়ে বেশি।

তিনি আরও বলেন: ভাষাজ্ঞানসম্পন্ন দাঈদের র‌্যাংকিং করে অভিজাতদের নির্দিষ্ট স্থানে পাঠানো উচিত।

এই প্রক্রিয়া বছরজুড়ে চলা উচিত, বিশেষ করে আরবি ভাষায় প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করতে হবে।

দলনেতাদের উচিত আরবাঈনের কয়েক দিন আগে এলাকায় গিয়ে প্রস্তুতি নেওয়া।
সারসংক্ষেপ:

এই সভাটি আরবাঈনের সময় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফলপ্রসূ দাওয়াত নিশ্চিত করতে এবং হাওজার সম্ভাবনাগুলি কাজে লাগাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha