মঙ্গলবার ৩ জুন ২০২৫ - ১০:৪৬
ইসলামে হাস্য-রসিকতার গুরুত্ব

গুনাহ, তাচ্ছিল্যের উদ্দেশ্য ও অহংকারমুক্ত হাস্য-রসিকতা ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাহ। তবে শর্ত হলো তা যেন নৈতিক সীমা লঙ্ঘন না করে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইমাম মুহাম্মাদ বাকির (আ.) গুনাহ, তাচ্ছিল্যের উদ্দেশ্য ও অহংকারমুক্ত হাস্য-রসিকতার প্রশংসা করেছেন- যা সামাজিক সম্পর্কে সৌহার্দ্য বৃদ্ধি করে। ইমাম (আ.) বলেছেন,
اِنَّ اللّه‏َ عَزَّوَجَلَّ یُحِبُّ المُداعِبَ فِی الجَماعَةِ بِلارَفَثٍ
নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা সেই ব্যক্তিকে ভালোবাসেন যে সমাজে (তথা সঙ্গী-সাথীদের সাথে) নির্মলভাবে রসিকতা করে- কোনো অশ্লীলতা ও গুনাহ ছাড়াই।

[উসুলে কাফি, খণ্ড- ২, পৃষ্ঠা- ৩৪৫]

ইমাম বাকির (আ.)-এর হাদিসের শিক্ষা ও তাৎপর্য:

১. সামাজিক সম্পর্কে ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি:

- হাদিসটি প্রমাণ করে ইসলাম কঠোর ধর্ম নয়, বরং ভারসাম্যপূর্ণ জীবনবোধের ধর্ম

- সামাজিক সম্পর্কে হালকা রসিকতার জন্য ইসলামে অনুমোদন রয়েছে

- রসিকতা মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সৃষ্টির মাধ্যম

২. রসিকতার ইসলামী শিষ্টাচার- অবশ্য পালনীয়:

- অশ্লীলতা পরিহার (গালিগালাজ, অশালীন ইঙ্গিত)

- কারো অনুভূতিতে আঘাত না দেওয়া

- সত্য বিকৃত না করা

প্রয়োজনীয় সীমারেখা:

- নামেমাত্র হাস্যরস নয়, বরং সম্পর্ক উন্নয়নের হিকমতপূর্ণ পদ্ধতি

- সময়-স্থান-পাত্রভেদে রসিকতার মাত্রা নির্ধারণ

- ধর্মীয় বিধান বা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে রসিকতা না করা

৩. আধুনিক প্রেক্ষাপটে প্রয়োগ:

- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রসিকতা করার সময় ইসলামী আদব মেনে চলা

- পারিবারিক সম্পর্কে হালকা হাসি-তামাশার মাধ্যমে সম্পর্কের উন্নয়ন

- কর্মক্ষেত্রে সুস্থ মানসিকতার জন্য নির্মল রসিকতার চর্চা

৪. মনস্তাত্ত্বিক উপকারিতা:

- মানসিক চাপ কমায়

- সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করে

- ইতিবাচক চিন্তাশক্তি বাড়ায়

৫. ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
ইমাম বাকির (আ.)-এর যুগে সমাজে কঠোরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় তিনি এই সুন্নাহ পুনর্জীবিত করেন, যা প্রমাণ করে:

- ইসলাম সর্বদা মানবিক চাহিদার প্রতি সচেতন

- ধর্মীয় নেতৃত্বের দায়িত্ব শুধু বিধিনিষেধ নয়, জীবনবোধ শিক্ষা দেওয়া

বাস্তব জীবনে বাস্তবায়নের উপায়:

১. দৈনন্দিন কথোপকথনে একটি নির্মল রসিকতা সংযোজন

২. অপ্রীতিকর রসিকতা শুনলে সুন্দরভাবে উপেক্ষা করা

3. পরিবারে শিশুদের সাথে ইসলামী আদব শেখানোর সময় এই হাদিস শিক্ষা দেওয়া

সতর্কতা: “রসিকতা নামে যেন কোনো হারাম কাজ বা মিথ্যা প্রচার না হয় কিংবা কাউকে অপমান ও অপদস্থ না করা হয়”- এই নীতিটি সর্বদা স্মরণ ও সতর্ক থাকতে হবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha