হাওজা নিউজ এজেন্সি: প্রয়াত আয়াতুল্লাহ বেহজাত (রহ.) দোয়ার গুণাবলি ও তার মাধ্যমে শত্রু পরাজয়ের বিষয়ে গভীর ও পথনির্দেশক বক্তব্য রেখেছেন। “দার মাহাযারে হযরতে আয়াতুল্লাহ আল-উজমা বেহজাত” গ্রন্থের ১৩৫তম পৃষ্ঠায় এ সম্পর্কে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ মতামত সংকলিত আছে।
ফার্স নিউজের বরাতে জানা যায়, আয়াতুল্লাহ বেহজাত (রহ.) দোয়াকে মুমিনের অস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং বলেন,
الدُّعَاءُ سِلاحُ المُؤْمِنِ
— “দোয়া মুমিনের অস্ত্র।”
তিনি প্রশ্ন করেন, “আমরা যখন সামরিক প্রস্তুতিতে কাফেরদের থেকে পিছিয়ে আছি, তাহলে কি দোয়ার ক্ষেত্রেও পিছিয়ে থাকব?”
তিনি বলেন, আল্লাহ কুরআনে ঘোষণা করেছেন,
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ، أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ
যখন আমার বান্দারা তোমার কাছে আমার বিষয়ে জিজ্ঞেস করে, বলে দাও: আমি খুবই নিকটবর্তী। যে আমাকে ডাকে, আমি তার ডাকে সাড়া দিই। (সূরা বাকারা: ১৮৬)
তবে তিনি শুধু কথার দোয়াকে যথেষ্ট মনে করেননি। বরং বলেন, “দোয়া শুধু ঠোঁটের বুলি নয়, তা হতে হবে অন্তরের অনুশোচনা ও পাপ বর্জনের দৃঢ় সংকল্পের বহিঃপ্রকাশ। প্রকৃত দোয়া হলো— গুনাহ বর্জনের অঙ্গীকার, আত্মনিমগ্নতা ও গভীর আবেদন।”
তিনি আরো বলেন, “আল্লাহ পাপীদের মৃত্যুর সময়ের অবস্থা সম্পর্কে বলেন,
وَأَنذِرْهُمْ يَوْمَ الْحَسْرَةِ... وَإِذْ الْمُجْرِمُونَ نَاكِسُوا رُءُوسِهِمْ عِندَ رَبِّهِمْ
তাদের সেই অনুতাপের দিনের ব্যাপারে সতর্ক করো, যেদিন শাস্তি কার্যকর হবে এবং তারা লজ্জায় মাথা নিচু করবে।”
দোয়া প্রসঙ্গে আয়াতুল্লাহ বেহজাত (রহ.) বলেন, “প্রত্যেকবার আমি মনে করি আমার অন্তর ঠিক হয়ে গেছে, আমি তওবাকারীদের সঙ্গী হয়েছি, তখনই এমন এক বিপদ আসে, যা আমাকে আল্লাহর ইবাদতের পথ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়।”
সবশেষে তিনি দোয়ার আত্মিক গুণের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, “তোমার সঙ্গে আল্লাহর একান্ত মুনাজাতই আমার অন্তরের প্রশান্তি ও জীবনের আনন্দ।”
আয়াতুল্লাহ বেহজাত (রহ.) দোয়াকে শুধু একটি আধ্যাত্মিক প্রার্থনা হিসেবে নয়, বরং আত্মিক প্রস্তুতি ও গুনাহ পরিহারের দৃঢ় ইচ্ছার মাধ্যমে শত্রু মোকাবেলার কৌশল হিসেবে দেখেছেন। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, বাস্তব বিজয়ের চাবিকাঠি হলো: আত্মশুদ্ধি, আন্তরিক তওবা এবং দৃঢ় সংকল্পে পরিপূর্ণ দোয়া।
আপনার কমেন্ট