হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ হোসেইনি বুশেহরি শহীদদের স্মরণে বলেন, , এই সভা শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আয়োজিত, যেখানে বিভিন্ন শহর থেকে লোকজন ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা অংশ নিয়েছেন।
শহীদদের মহত্ত্ব এবং জাতির অনুপ্রেরণা: তিনি বলেন, জাতির যে অংশ সবসময় মাঠে থাকে, তাদের কাছ থেকেই অনুপ্রেরণা নেওয়া উচিত। শহীদরা চিরকাল স্মরণীয় ও ভালোবাসার পাত্র, যার সর্বোচ্চ উদাহরণ হলেন ইমাম হোসেইন (আ.)।
শহীদদের স্মরণ সভা সমাজে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সূচনা করে: শহীদদের স্মরণে আয়োজিত অনুষ্ঠানসমূহ তরুণদের জন্য আদর্শ গড়ে তোলে ও সামাজিক দৃঢ়তা তৈরি করে। এগুলো শুধু আবেগ নয়, বরং বাস্তবিকভাবে প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে।
রিজিম সন্ত্রাস ও যুদ্ধের মাধ্যমে কূটনৈতিক ব্যর্থতা পূরণ করতে চেয়েছিল: দুশমনরা যখন আলোচনায় সফল হয়নি, তখন তারা ইসরায়েলি হামলার মাধ্যমে সামরিকভাবে সফলতা পেতে চেয়েছিল। কিন্তু জাতির বুদ্ধিদীপ্ত প্রতিক্রিয়া দুশমনদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করেছে।
যুদ্ধবিরতির সময় আমাদের করণীয়: এই সময়, যখন সামরিক যুদ্ধ থেমে আছে, আমাদের করণীয় হলো সত্য প্রচার, জাতীয় ঐক্য সংহত রাখা, এবং রাহবারের নেতৃত্বে পথ চলা অব্যাহত রাখা।
শহীদ মানে মৃত্যু নয়, বরং আলোর উৎসের দিকে অগ্রযাত্রা: কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, শহীদরা মৃত নন, বরং তাঁরা আল্লাহর নিকটে জীবিত ও সম্মানিত। আমাদের উচিত তাঁদের অবস্থান গভীরভাবে উপলব্ধি করা।
শহীদরা মহান মর্যাদার অধিকারী: শহীদরা সাধারণ কেউ নন; তারা আল্লাহর বিশেষ নিয়ামতের ভাগীদার। শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি তিনি বলেন, আপনারা গর্বিত হোন, কারণ তাঁদের স্থান অনেক উচ্চে।
ইরানি জাতির শিরায় ইসার বা আত্মত্যাগের সংস্কৃতি প্রবাহিত হচ্ছে: দুঃখের সময়েও শহীদদের পরিবার, বিশেষ করে মায়েরা, আত্মত্যাগের উদাহরণ স্থাপন করেছে। এই সংস্কৃতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলছে।
ইরানি জাতি শুরু থেকেই ইসলাম ও আহলে বাইতের প্রেমে ছিল: ইরানিরা ইসলাম আসার প্রথম দিন থেকেই আহলে বাইতের প্রতি গভীর ভালোবাসা লালন করে আসছে। এই ভালোবাসা জাতির অস্তিত্বের অংশ।
দুশমনের ভুল কৌশল ও ইসলামী ইরানের প্রতিরোধ
দুশমনরা মনে করেছিল সন্ত্রাস ও আক্রমণের মাধ্যমে জাতিকে দুর্বল করে দেবে, কিন্তু ইরানিরা তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়।
সর্বোচ্চ নেতার দিকনির্দেশনা ও জাতির আনুগত্য দুশমনের পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়: রাহবারের (ইমাম খামেনেয়ী) বার্তায় তিনটি অভিনন্দন ছিল, যার একটি হলো—জাতির দৃঢ় উপস্থিতি। শহীদের রক্তে বিপ্লব আরও দৃঢ় হয়েছে।
দুশমন আলোচনার নামে শত্রুতার কৌশল নিয়েছিল: মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসলামি ইরানকে ভেঙে দেওয়া; পারমাণবিক বা ক্ষেপণাস্ত্র ছিল কেবল অজুহাত। কিন্তু জাতি তাদের ষড়যন্ত্র বুঝে ফেলেছিল।
যুদ্ধে প্রকৃত বন্ধু ও শত্রুর পরিচয় স্পষ্ট হয়: এই সংঘর্ষ জাতিকে প্রকৃত বন্ধু ও শত্রুদের চেনার সুযোগ দিয়েছে। জনগণ শহীদদের সম্মান জানিয়ে শত্রুকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে
নেতার দৃঢ় পদক্ষেপ ও শত্রুর হুঁশিয়ারি: নেতার দ্রুত প্রতিক্রিয়া, নতুন নেতাদের নিয়োগ, এবং প্রতিশোধমূলক হামলা শত্রুকে চমকে দিয়েছে। এমনকি যারা আগে ক্ষুব্ধ ছিলেন, তারাও নেতার বুদ্ধিমত্তায় অভিভূত হয়েছেন।
শত্রু যুদ্ধ শুরু করলেও শেষে যুদ্ধবিরতির জন্য কাকুতি-মিনতি করে: প্রথমে আত্মবিশ্বাসী হলেও শেষ দিকে ইসরায়েল এবং তার মিত্রদের অবস্থা এমন হয়ে পড়ে যে, তারা নিজেরাই যুদ্ধবিরতির অনুরোধ করে।
জাতি এক হয়ে শক্তিশালীভাবে প্রতিরোধ করেছে: ইরানের সকল স্তরের মানুষ—ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিজীবী থেকে ক্রীড়াবিদ পর্যন্ত—এই লড়াইয়ে অংশগ্রহণ করেছে, এমনকি কুম ও নাজাফের মারাজেও সমর্থন দিয়েছেন।
এই লড়াই ছিল শুধু ইসরায়েলের সাথে নয়, বরং কুফরের পুরো জোটের বিরুদ্ধে: এই যুদ্ধে ইরান একা ছিল, কিন্তু আল্লাহর উপর নির্ভরতা ও জাতির আত্মবিশ্বাস তাকে জয়ী করেছে।
এই বিজয় ছিল আল্লাহর দান; কারণ ও উপকরণ ছিল মাধ্যম মাত্র:;পবিত্র কোরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, জয় আসে আল্লাহর কাছ থেকে। আমাদের উচিত এই সুযোগে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক আরও মজবুত করা।
আল্লাহ শহীদের পরিবারের জন্য অভিভাবক: রাসুল (সা.)-এর বাণী অনুসারে, আল্লাহ নিজেই শহীদের পরিবারের অভিভাবক। যিনি তাদের সম্মান দেন, তিনি আল্লাহকেই সম্মান দেন।
শহীদ পরিবারকে সম্মান জানানো ইসার সংস্কৃতিকে জীবিত রাখে: আস্তান-এ-কুদসের কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি বলেন, শহীদ পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো একটি মহৎ কাজ, যা ইসার ও শাহাদতের চেতনা জীবিত রাখে।
দায়িত্বশীলদের উচিত জনগণের মূল্য বোঝা ও তাঁদের সন্তুষ্ট রাখা: তিনি আহ্বান জানান, যারা ক্ষমতায় আছেন, তারা যেন জনগণের বিশ্বাস ও ভালোবাসার মূল্য দেন এবং সে অনুযায়ী কাজ করেন।
দেশের কূটনীতি আরও সক্রিয় হতে হবে: দূতাবাস ও কূটনৈতিক অঙ্গনে দেশের উপস্থিতি আরও শক্তিশালী হতে হবে। যারা সমর্থন করেছে, তাদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করে বিজয়ের সুফল নিশ্চিত করতে হবে।
আপনার কমেন্ট