হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, গাজায় দুর্ভিক্ষ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, এবং মানুষ মারাত্মক খাদ্য সংকটে ভুগছে—সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরা। গাজার রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মানুষ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়া এখন সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, এবং সবাই কেবল এক টুকরো রুটির খোঁজে ছুটছে। কিন্তু যখন ফিলিস্তিনিরা খাবারের খোঁজে বের হয়, তখন তাদের জবাব হয় গুলি আর মৃত্যু।
জাতিসংঘের মানবাধিকার দফতর জানিয়েছে, গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় খাবারের জন্য লাইনে দাঁড়ানো অবস্থায় এক হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে দখলদার সেনারা শহীদ করেছে। তাদের বেশিরভাগকেই ইসরায়েল সমর্থিত মার্কিন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলোর আশপাশে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে একজন মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে, মার্কিন সেনারা গাজায় ত্রাণ বিতরণের স্থানগুলোতে ফিলিস্তিনিদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু করেছে যাতে তারা ভয়ে সেই জায়গাগুলো থেকে সরে যায়।
এদিকে, ‘ক্ষুধার রাজনীতিকে উন্মোচন’ শীর্ষক একটি প্রচারণার কর্মী মোহাম্মদ আল-সিকলি আল-আলম নিউজ নেটওয়ার্ক-কে বলেছেন, "একবিংশ শতাব্দীতে গাজাকে ঘিরে এমন দুর্ভিক্ষের চিত্র আমাদের বিস্মিত করছে।" তিনি আরও বলেন, মানুষকে এমনসব এলাকায় যেতে বাধ্য করা হচ্ছে, যেখানে ইহুদিবাদী সেনারা অবস্থান করছে—ফলে তারা হয় শহীদ হচ্ছেন, নয়তো গুরুতর আহত।
গাজায় আল জাজিরার প্রতিনিধি তারেক আবু আসিম বলেন, "মায়েরা তাদের সন্তানদের জন্য রুটি জাতীয় কিছু বানাতে শুকনো শস্য, পশুখাদ্য, এমনকি ঘাস পর্যন্ত গুঁড়ো করে নিচ্ছেন।"
গাজার মেয়রের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, "ইসরায়েলি সেনারা গাজার ক্ষুধার্ত মানুষকে খাবারের জন্য বহু কিলোমিটার হেঁটে যেতে বাধ্য করছে। কিন্তু খাবারের বদলে তারা পাচ্ছে ইসরায়েলি বন্দুকের গুলি। এটি এখন শুধু একটি অবরোধ নয়, এটি মানব-শিকার (human hunting)।"
খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালের ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবী সার্জন ড. নিক মিনার্ড বলেছেন, "গাজায় বিশেষ করে শিশুদের অবস্থা অত্যন্ত অমানবিক ও ধ্বংসাত্মক। এমনকি বলা যায়—তাদের কেবল হাড় ও চামড়া অবশিষ্ট আছে—তবুও তা বর্তমান পরিস্থিতির পুরোপুরি বর্ণনা দিতে যথেষ্ট নয়।"
আপনার কমেন্ট