হাওজা নিউজ এজেন্সি: তেল আবিবভিত্তিক দৈনিক হারেতজ-এ শুক্রবার প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বারাক বলেন, “আজকের ইসরায়েল আর সেই পরিচিত রাষ্ট্র নয়। জায়োনিস্ট স্বপ্ন ও আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা—দু’টোই ভেঙে পড়ছে।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আন্তর্জাতিক পরিসরে ইসরায়েল ক্রমেই একঘরে হয়ে পড়ছে এবং দেশের বেশিরভাগ জনগণ সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ হলো নাগরিক অবাধ্যতা ও সর্বজনীন ধর্মঘট, যার মাধ্যমে হয় সরকার পরিবর্তন, না হয় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে।”
বারাক আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ইসরায়েল এখন গাজায় এক প্রকার ‘অপসানযোগ্য যুদ্ধ’ বা ‘ক্ষয়িষ্ণু সংঘাতে’ জড়িয়ে পড়েছে এবং এক গভীর অচলাবস্থার কাদায় আটকে গেছে।”
তিনি নেতানিয়াহু সরকারের ব্যর্থতা নিয়েও কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “নিরপরাধ মানুষের রক্ত ঝরছে, রিজার্ভ সৈনিকদের পরিবার ধ্বংসের মুখে, আর জিম্মিরা অবহেলিত হচ্ছে—সরকার কেবলমাত্র ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য এসবের তোয়াক্কা করছে না।”
উল্লেখ্য, গত ২১ মাস ধরে গাজায় চলমান যুদ্ধটি মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম দীর্ঘস্থায়ী ও ব্যয়বহুল সংঘাতে পরিণত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে ৫৯,০০০’র বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু ও বেসামরিক নাগরিক।
গাজার অবকাঠামো প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত, সম্পূর্ণ অবরোধের কারণে সেখানে চরম খাদ্য ও ওষুধের সংকট তৈরি হয়েছে। মানবাধিকার ও ত্রাণ সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতিকে “সম্পূর্ণ মানবিক বিপর্যয়” হিসেবে অভিহিত করেছে।
আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের প্রতি মনোভাব দৃশ্যত পরিবর্তিত হয়েছে। স্পেন, আয়ারল্যান্ড ও নরওয়ে ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ফ্রান্স-ও শিগগিরই সে পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে, যুদ্ধের দীর্ঘস্থায়িত্ব, ব্যাপক প্রাণহানি ও ভয়াবহ অর্থনৈতিক-সামাজিক সংকটের কারণে ইসরায়েলি সমাজে গভীর রাজনৈতিক বিভক্তি তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি সরকারবিরোধী বিরাট গণবিক্ষোভ শুরু হয়েছে, যা অনেক বিশ্লেষকের মতে নেতানিয়াহু সরকারের বৈধতা হারানোর ইঙ্গিত বহন করে।
আপনার কমেন্ট