মঙ্গলবার ২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১০:২৭
ইইউ৩-এর স্ন্যাপব্যাক প্রত্যাখ্যান করল ইরান, রাশিয়া ও চীন

ইরান, রাশিয়া ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জাতিসংঘ মহাসচিব ও নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির উদ্দেশে এক যৌথ চিঠিতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির সাম্প্রতিক উদ্যোগকে “আইনগতভাবে ভিত্তিহীন” আখ্যা দিয়েছেন। ইউরোপের এই তিন দেশ সম্প্রতি তথাকথিত স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম সক্রিয় করে ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি সোমবার এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, তিন দেশের এই যৌথ চিঠিতে ইউরোপীয়দের পদক্ষেপকে “শূন্য ও বাতিল” ঘোষণা করা হয়েছে।

আরাকচি আরও জানান, চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বারা যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা (JCPOA) লঙ্ঘনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। একইসঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলো কীভাবে নিজেদের অঙ্গীকার পূরণ না করে বরং অবৈধ মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সঙ্গে একাত্ম হয়েছে, সেটিও উল্লেখ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের মূল দায়িত্ব আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা। কিন্তু EU3 (ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি)-এর এই উদ্যোগ সেই দায়িত্বকে বিকৃত করছে এবং পরিষদকে বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার রক্ষক নয়, বরং চাপ প্রয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।”

চিঠিতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় তিন দেশের এই স্ন্যাপব্যাক প্রক্রিয়া সক্রিয়করণ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের পরিপন্থী এবং “আইনগত ও প্রক্রিয়াগতভাবে ত্রুটিপূর্ণ।” এতে আরও বলা হয়:
“EU3 তাদের পদক্ষেপের মাধ্যমে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ক্ষমতা ও কার্যক্রমকে অপব্যবহার করছে এবং JCPOA ও UNSCR 2231 বাস্তবায়ন ভেঙে পড়ার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করছে। আমরা ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের এই ধ্বংসাত্মক নীতি পরিবর্তনের আহ্বান জানাই।”

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি (JCPOA) অনুযায়ী ইরান তার কিছু পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করার বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি পেয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে পুনরায় অবৈধ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং চালু করে তথাকথিত “সর্বোচ্চ চাপ” নীতি।

যুক্তরাষ্ট্রের সরে যাওয়ার পর ইউরোপীয় স্বাক্ষরকারীরা নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় এবং চুক্তি রক্ষায় কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

বর্তমানে ইউরোপীয় দেশগুলো নিরাপত্তা পরিষদকে ৩০ দিনের সময় দিয়েছে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য— ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত থাকবে, নাকি শিথিলকরণ বহাল থাকবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha