হাওজা নিউজ এজেন্সি: গীতি ফিরুজি আরও বলেন, নবুওয়তের ১৫ বছর আগে সংঘটিত এই বিবাহ ছিল রাসূলুল্লাহ (সা)-এর জীবনের প্রথম বিবাহ। প্রচলিত বর্ণনা অনুযায়ী, এসময় নবীজি (সা)-এর বয়স ছিল ২৫ বছর এবং হযরত খাদিজা (সা.আ.)-এর বয়স ছিল ৪০ বছর। যদিও কিছু সূত্রে খাদিজা (সা.আ.)-এর বয়স ২৫ থেকে ৪৬ বছর এবং নবীজি (সা)-এর বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছর বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঐতিহাসিক সূত্র মতে হযরত খাদিজা (সা.আ.)-এর সাথে নবীজি (সা)-এর পরিচয় হয়েছিল খাদিজা (সা.আ.)-এর ব্যবসায়িক কাফেলার মাধ্যমে। তিনি নবীজি (সা)-কে শামগামী কাফেলায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এ সফরে মাইসারা নামক খাদিজা (সা.আ.)-এর দাস নবীজি (সা)-এর সাথে ছিলেন। সফর শেষে তিনি নবীজি (সা)-এর উত্তম চরিত্র ও বিশ্বস্ততার প্রশংসা করেন। এরপর খাদিজা (সা.আ.)-এর মনে তাঁর সাথে বিবাহের আগ্রহ জন্মায়।
তিনি উল্লেখ করেন, খাদিজা (সা.আ.) তাঁর ইচ্ছা একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তির মাধ্যমে নবীজি (সা)-কে জানান এবং নবীজি (সা) এ বিষয়ে চাচাদের সাথে পরামর্শ করেন। পরে তাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে খাদিজা (সা.আ.)-এর অভিভাবকের কাছে প্রস্তাব দেন এবং বিবাহ সম্পন্ন হয়।
ফিরুজি বলেন, হযরত খাদিজা (সা.আ.)-এর সাথে রাসূলুল্লাহ (সা)-এর সংসার থেকে ছয় সন্তান জন্মগ্রহণ করেন—কাসিম, রুকাইয়া, জয়নাব, উম্মে কুলসুম, ফাতিমা (সা.আ) ও আবদুল্লাহ। যদিও কিছু ইতিহাসবিদের মতে, জয়নাব ও রুকাইয়া দত্তক কন্যা ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, হযরত খাদিজা (সা.আ.) ২৫ বছর নবীজি (সা)-এর সাথে দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করেন। ঐতিহাসিক তথ্য অনুযায়ী, এ বিবাহ নবুওয়তের ১৫ বছর আগে বা কিছুটা আগে সংঘটিত হয়েছিল, যা শাম সফরের দুই মাস ২৫ দিন পর সম্পন্ন হয়। এই আকদের খুতবা পাঠ করেন হযরত আবু তালিব (আ)।
ফিরুজি বলেন, হযরত খাদিজা (সা.আ.) ছিলেন এক ধনী ও সম্মানিত নারী। সমাজের অনেকেই তাঁর সাথে বিবাহ করতে চাইলেও তিনি রাসূলুল্লাহ (সা)-কে বেছে নেন, যাতে তিনি নবুওয়তের কঠিন দায়িত্বের পথে সঙ্গী হতে পারেন। তিনি নিজের সম্পদ ইসলামের অগ্রযাত্রার জন্য ব্যয় করেছেন এবং নবীজি (সা)-কে কখনো একা হতে দেননি।
তিনি নবীজি (সা)-এর একটি হাদিস উল্লেখ করে বলেন, "খাদিজার মতো আর কেউ নেই। যখন মানুষ আমাকে অস্বীকার করল, তখন তিনিই আমাকে সত্য বলে মেনে নিলেন। তিনি তাঁর সম্পদ দ্বারা আমাকে আল্লাহর পথে সাহায্য করলেন। আল্লাহ আমাকে আদেশ করেছেন যে আমি তাঁকে জান্নাতে পান্নার প্রাসাদের সুসংবাদ দিই, যেখানে কোনো কষ্ট ও কোলাহল থাকবে না।" (বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড ৪৩, পৃষ্ঠা ১৩১)
তিনি বলেন, হযরত খাদিজা (সা.আ.) সকল যুগের নারীদের জন্য এক অনন্য আদর্শ। আজকের যুগের নারীদের উচিত তাঁর জীবন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা, যাতে তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনকে সর্বোত্তমভাবে সাজাতে পারে।
আপনার কমেন্ট