হাওজা নিউজ এজেন্সি: তাঁর বিশ্লেষণধর্মী নিবন্ধে তিনি পাশ্চাত্য সভ্যতার সংকটের মূল কারণ ব্যাখ্যা করে বলেন, ইসলামী বিপ্লব ছিল এক “সভ্যতাগত ভূমিকম্প”, যা ঈশ্বরকে সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে সরিয়ে দেওয়ার পশ্চিমা ধারণাকে অকার্যকর করে দেয়।
পাশ্চাত্য সভ্যতার সংকট
আয়াতুল্লাহ কাবির মতে, আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতা ধর্মকে জনজীবন থেকে সরিয়ে নতুন “মূর্তি” তৈরি করেছে—
▪️পুঁজিবাদের আধিপত্য: অর্থনৈতিক কর্পোরেশন ও শক্তিশালী লবিগুলো রাজনীতি ও অর্থনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে, যা বৈষম্য ও কাঠামোগত অন্যায়ের জন্ম দিয়েছে।
▪️ভোগবাদ ও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদ: চরম ভোগলিপ্সা ও স্বার্থকেন্দ্রিক জীবনযাপন মানুষকে নতুন এক দাসত্বে আবদ্ধ করেছে এবং পরিবারভিত্তিক নিরাপদ সুখকে ধ্বংস করেছে।
▪️ক্ষমতার পূজা: আধুনিক যুগের “ফিরাউনরা” একমেরু বিশ্বব্যবস্থা তৈরি করে জাতিগুলোকে যুদ্ধ, দমন ও রক্তপাতের চক্রে আবদ্ধ করেছে।
এর ফলশ্রুতিতে বিশ্ব আজ শাসনব্যবস্থার সংকট, আধ্যাত্মিকতার শূন্যতা, নিরাপত্তাহীনতা, পরিবারের ভাঙন, সামাজিক বৈষম্য, পরিবেশ বিপর্যয় ও মানবতার অবক্ষয়ের মুখে—যার স্পষ্ট উদাহরণ গাজার হত্যাযজ্ঞ।
ইসলামী বিপ্লবের প্রস্তাবিত সমাধান
আয়াতুল্লাহ কাবি বলেন, ইসলামী বিপ্লব মানুষকে আল্লাহমুখী জীবনের দিকে আহ্বান করেছে এবং হায়াত তাইয়্যেবা (পবিত্র জীবন)-এর মডেল উপস্থাপন করেছে—
▪️ন্যায়ভিত্তিক অর্থনীতি: অর্থনীতি হবে মানুষের সেবায়, মানুষ হবে না অর্থনীতির দাস। ভোগবাদ ও বিলাসিতা এখানে অমূল্য।
▪️মানবমর্যাদা ও প্রকৃত স্বাধীনতা: প্রকৃত স্বাধীনতা নিহিত আছে আল্লাহর দাসত্ব ও মানবসেবায়; প্রকৃত আনন্দ পাওয়া যায় আধ্যাত্মিকতায়।
▪️অহংকারবিরোধিতা: ক্ষমতা হবে ন্যায় প্রতিষ্ঠা ও নিপীড়িতদের রক্ষার হাতিয়ার, আধিপত্যের মাধ্যম নয়।
তিনি বলেন, আজকের দ্বন্দ্ব কেবল রাজনৈতিক বা সামরিক নয়, বরং এটি এক “সভ্যতাগত বর্ণনার যুদ্ধ”। পশ্চিমা অভিজ্ঞতা দেখিয়েছে যে খোদা ছাড়া ন্যায়সঙ্গত ও অর্থবহ সমাজ গঠন অসম্ভব। ইসলামী বিপ্লব প্রমাণ করেছে যে বিজ্ঞান, বিশ্বাস, ন্যায়বিচার, নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বিত সমন্বয়ই মানবজাতির মুক্তির পথ।
আয়াতুল্লাহ কাবির মতে, মানবতার জন্য একমাত্র পরিত্রাণ নিহিত আছে ধর্মনিরপেক্ষ আধুনিকতাকে অতিক্রম করে নতুন তাওহিদভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায়—যেখানে ঈমান, বিজ্ঞান, নৈতিকতা, ন্যায়বিচার ও আধ্যাত্মিকতা একসাথে অগ্রসর হবে।
আপনার কমেন্ট