হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামের ইতিহাস ও হাদিসশাস্ত্রে আলোচিত গ্রন্থ আল-ফিসাল-এ আন্দালুসের বিশিষ্ট আলেম ইবনে হাজমের বক্তব্য নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে, তিনি খলিফা আলী (আ.)-এর প্রতি হওয়া অবিচারের প্রসঙ্গে আবেগঘন মন্তব্য করেন—“এখন আমি জানি না, মানুষকে আলীর (আ.) প্রতি হওয়া অবিচারের জন্য রক্ত অশ্রু ঝরানো উচিত।”
(আল-ফিসাল, খণ্ড-৪, পৃষ্ঠা ১৫২)।বইটিতে তিনি হাদিসশাস্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—ইমামত কুরাইশে থাকবে—এ নিয়ে মতামত দেন। ইবনে হাজম দাবি করেন, এ রেওয়ায়েত তাওয়াতুর পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, কারণ তিনি বলেন এই বর্ণনাটি আনাস, আবদুল্লাহ ইবনে উমর ও মু‘আবিয়ার মাধ্যমে এসেছে। অর্থাৎ, তিনজন বর্ণনা করলেই কি সেটা মুতাওয়াতির হবে?
একই গ্রন্থে ইবনে হাজম আরও উল্লেখ করেন, ১৭টি সূত্রে একটি রেওয়ায়েত এসেছে, যা ৮-৯ জন সাহাবি থেকে বর্ণিত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়—এক্ষেত্রে তিনি নিজেই বলেন, “এগুলো মাকসুবাত (মিথ্যা বর্ণনা), যা মুনাফিক ও নাস্তিকরা তৈরি করেছে।”
এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে—তাহলে কি ইবনে আব্বাস, সা‘দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস, সালমান বা জাবির ইবনে আবদুল্লাহ আনসারির মতো সাহাবিদের নাস্তিক বলা হচ্ছে? সমালোচকেরা দাবি করছেন, এমন বক্তব্য ইসলামের ইতিহাসে সম্মানিত সাহাবিদের মর্যাদাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
এই প্রসঙ্গে আলেমদের মধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এক পক্ষ বলছে, ইবনে হাজমের ব্যাখ্যায় দ্বিচারিতা রয়েছে—কখনো তিনি কয়েকজন বর্ণনাকারীর হাদিসকে মুতাওয়াতির বলেন, আবার বহু সূত্র থাকা সত্ত্বেও অন্য হাদিসকে প্রত্যাখ্যান করেন। অন্যদিকে, তাঁর সমর্থকেরা দাবি করছেন, ইবনে হাজম মূলত দুর্বল সূত্রগুলো আলাদা করার চেষ্টা করেছিলেন।
ইতিহাসবিদেরা মনে করছেন, এ ধরনের আলোচনা প্রমাণ করে যে ইসলামের প্রথম যুগের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিতর্ক আজও গবেষক ও সাধারণ মুসলমানদের মাঝে সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
আপনার কমেন্ট