হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইরানের ধর্মীয় নগরী কোমের হাওজায়ে ইলমিয়া (ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) এই আলেম বলেন, আমাদের জন্য জরুরি যে আমরা রাসূলুল্লাহ (সা.) ও আহলে বাইত (আ.)-এর মহিমান্বিত চরিত্র সম্পর্কে জানি এবং নিজেদের জীবনে সেই গুণাবলি অর্জনের চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, নবীজির (সা.) অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর সর্বজনীন দয়া। কোরআন তাঁকে “রহমাতুল্লিল আলামিন” বলে অভিহিত করেছে — অর্থাৎ, তিনি শুধু মুসলিমদের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতি ও সৃষ্টির জন্য রহমত।
হুজ্জাতুল ইসলাম রুদবারি বলেন, নবীজির (সা.) রহমত তাঁর কোমল স্বভাব ও অসাধারণ ধৈর্যের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি সবার জন্য দয়ালু হওয়ার কারণে স্বভাবতই সবার প্রতি দরদময় ছিলেন, এবং সেই দরদ থেকেই তাঁর কোমলতা ও সহনশীলতা ফুটে উঠেছিল।
কোরআনে এসেছে:
“এটি আল্লাহর রহমতের ফল যে তুমি তাদের প্রতি কোমল হয়েছিলে। তুমি যদি কঠোর ও রূঢ় হতে, তবে তারা তোমার চারপাশ থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে যেত। তাই তুমি তাদের ক্ষমা করো, তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করো এবং তাদের সঙ্গে পরামর্শ করো। আর যখন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলো, তখন আল্লাহর ওপর ভরসা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদের ভালোবাসেন।” [আলে ইমরান: ১৫৯]
তিনি আরও বলেন, নবীজির (সা.) জীবনকথা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তিনি প্রকাশ্য দাওয়াত শুরু করেছিলেন এই ঘোষণার মাধ্যমে: "قولوا لا إله إلا الله تفلحوا" — “বলুন, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, তবেই সফল হবেন।” কিন্তু এর আগেই নবীজির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল, যা ছিল মানুষের আস্থা অর্জন।
তিনি বলেন, নবীজির (সা.) প্রথমেই মানুষকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন— “যদি আমি বলি এই পাহাড়ের পেছনে শত্রু আছে এবং তারা আক্রমণ করতে চলেছে, তোমরা কি আমাকে বিশ্বাস করবে?” তারা একবাক্যে বলল: “হ্যাঁ।” এই আস্থাই ছিল নবীজির দাওয়াতের ভিত্তি এবং এটিই মানুষের হৃদয়কে তাঁর দিকে আকর্ষণ করেছিল। আজও ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে এই বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততা অপরিহার্য।
হুজ্জাতুল ইসলাম রুদবারি জোর দিয়ে বলেন, আমাদের উচিত নবীজির (সা.) আদর্শ অনুসরণ করা। দয়া, কোমলতা ও আমানতদারিত্বকে জীবনে ধারণ করলে আমরা নিজেদের ও সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে পারব।
তিনি বলেন, এই কয়েকটি গুণই নবীজির (সা.) মিশনকে দ্রুত সফল করেছে। আমরাও যদি তাঁকে আদর্শ মানতে চাই, তবে অন্তত এই তিনটি বৈশিষ্ট্য — সবার প্রতি দয়া, কোমল আচরণ এবং বিশ্বস্ত চরিত্র — আমাদের জীবনে আরও শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এটাই আজকের যুগের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।
আপনার কমেন্ট