হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলি হেফাজত থেকে মুক্তি পাওয়া “গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা”-এর কর্মী এবং ইতালীয় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য (বেনেদেত্তা স্কুদারি – Benedetta Scuderi) ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে বন্দিদের সঙ্গে নৃশংস আচরণের অভিযোগ করেছেন এবং ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের নীরবতা ভাঙার আহ্বান জানিয়েছেন।
“গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা”-এর কর্মীরা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের ওপর নৃশংস নির্যাতন চালায়, নারী স্বেচ্ছাসেবীদের হিজাব ছিঁড়ে ফেলে, এবং তাদের খাবার ও পানি থেকেও বঞ্চিত রাখা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দখলদার ইসরায়েলি নৌবাহিনী আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় “গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা”-এর সব জাহাজ দখল করে নিয়েছে, যেগুলোতে প্রায় ৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবক ছিলেন। এই আগ্রাসী অভিযানের পর, ডাচ স্বেচ্ছাসেবী ও ইউরোপীয় সংসদ সদস্যরা হেফাজতের সময়ের নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন।
ডাচ কর্মী রোজ ইয়াকিমা জানান, তাদেরকে প্রখর রোদে ফেলে রাখা হয়েছিল, খাবার, পানি ও ওষুধ কিছুই দেওয়া হয়নি, এমনকি অনেককে মারধরও করা হয়েছে। আরেক স্বেচ্ছাসেবক মোহাম্মদ আবু নাসের বলেন, প্রথম দুই দিন তাদের পানি পর্যন্ত দেওয়া হয়নি, ইনসুলিনের মতো প্রয়োজনীয় ওষুধও রাখা হয়, এবং আইনজীবী বা নিজ নিজ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগও দেওয়া হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন যে, ইসরায়েলি বাহিনী আরব ও মুসলিম কর্মীদের সঙ্গে বিশেষভাবে বর্ণবাদী ও অমানবিক আচরণ করেছে।
ইতালীয় এমইপি বেনেদেত্তা স্কুদারি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, তাকে এবং অন্য ৪০০-রও বেশি স্বেচ্ছাসেবককে হেফাজতের সময় খাবার, পানি ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছিল, এবং অনেকের সঙ্গে শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ইসরায়েলি বাহিনী স্বেচ্ছাসেবকদের ঘুমাতেও দেয়নি। স্কুদারি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর আন্তর্জাতিক আইন ও মানব মর্যাদা রক্ষায় ব্যর্থতার অভিযোগও তোলেন।
একজন ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবক জানান, নারীদের হিজাব টেনে ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল এবং তাদের ওষুধও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সব অভিযোগ অস্বীকার করে, দাবি করেছে যে সমস্ত বন্দির আইনগত অধিকার যথাযথভাবে রক্ষা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫০টিরও বেশি দেশের প্রায় ৪৭০ জন কর্মী নিয়ে গঠিত এই ফ্লোটিলা ৫০টি ছোট-বড় জাহাজসহ গাজায় ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দিতে যাচ্ছিল। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী তাদের হেফাজতে নিয়ে মানবতাবিরোধী নির্যাতন চালায়, যা আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র নিন্দার জন্ম দিয়েছে।
আপনার কমেন্ট