হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আ‘রাফি নাহজুল বালাগা থেকে রাসুলে আকরাম (সা.)-এর বিষয়ে একটি অংশ পাঠ করে পবিত্র নবীর উজ্জ্বল চরিত্র এভাবে বর্ণনা করেন: রাসুল (সা.) এমন সব দ্বার উন্মোচন করেছেন, যা তাঁর ব্যতীত এবং তাঁর নূর ব্যতীত মানবজাতির জন্য কখনো উন্মুক্ত হতো না। তিনি মিথ্যা ও বাতিল শক্তির সকল জৌলুস ধ্বংস করেছেন এবং তাঁর দৃঢ় সংকল্প ও অটল ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে সত্যের পথকে সুগম করেছেন।
হাওজার ইতিহাসচেতনা ও সভ্যতাভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি
তিনি ইসলামী বিপ্লবের মহান নেতার সাম্প্রতিক বার্তার আলোকে কয়েকটি মূল বিষয় বিশ্লেষণ করে বলেন: এই বার্তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো-ইতিহাসভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং হাওজায় ঐতিহাসিক চিন্তার পুনর্জাগরণের প্রয়োজনীয়তা। এজন্য আমি হাওজার পাঠ্যক্রম প্রণয়ন কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছি যেন সংক্ষিপ্ত ও ব্যবহারযোগ্য ঐতিহাসিক পাঠ্য তৈরি করা হয়, যা পরবর্তীতে প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ভিত্তি হতে পারে।
হাওজার জন্য নির্ধারিত ঐতিহাসিক পাঠ্যসমূহের পাঁচটি মূল বিভাগ
১. যুবসমাজ ও আধুনিক পাশ্চাত্য বিশ্বের ইতিহাস
২. গত দুই শতাব্দীতে ইসলামী বিশ্বের ইতিহাস
৩. ইরানের ইতিহাস (বিশেষভাবে গত ১৫০ বছরকে কেন্দ্র করে)
৪. হাওজা ও আলেমসমাজের ইতিহাস, বিশেষ করে গত ১০০ বছরে ক্বোমের ভূমিকা
৫. ইসলামী বিপ্লবের ইতিহাস
তাশাইয়্যু ও হাওজার ধারাবাহিক অগ্রগতি
আয়াতুল্লাহ আ‘রাফি বলেন: শিয়া আলেম সমাজ উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েও সার্বিকভাবে অগ্রগতির ধারাই বজায় রেখেছে। তাকিয়ার যুগ থেকে শুরু করে কারবালার পরবর্তী আন্দোলনসমূহ পর্যন্ত আমরা খাঁটি ইসলামের ক্রমবর্ধমান উত্থান প্রত্যক্ষ করেছি।
তিনি আরও বলেন: শেখ মুফিদ (রহ.) ও শেখ তুসি (রহ.)-এর বাগদাদের যুগ থেকে শুরু করে খাজা নাসিরউদ্দিন তুসি ও আল্লামা হিল্লি (রহ.)-এর মঙ্গোল আমল পর্যন্ত, আহলে বাইতের (আ.) জ্ঞান ও সংস্কৃতি এমন প্রভাব বিস্তার করেছে যে, রক্তপিপাসু মঙ্গোল শাসনযন্ত্রও একসময় সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হয়েছিল।
ইসলামী বিপ্লব: শিয়ার ইতিহাসে এক কৌশলগত অধ্যায়
দেশের হাওজা পরিচালক বলেন: ইসলামী বিপ্লব হলো হাওজার ঐতিহাসিক যাত্রাপথের এক অনন্য অধ্যায়। ইমাম খোমেইনি (রহ.)-এর নেতৃত্বে এবং ক্বোম শহরকে কেন্দ্র করে যে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল, তা ইতিহাসের সকল পূর্ববর্তী আন্দোলন থেকে ভিন্ন। অতীতে অনেক সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনের আন্দোলন ঘটেছিল, কিন্তু ইসলামী বিপ্লব হাজার বছরের চিন্তা ও সংগ্রামের ধারা এক বিন্দুতে মিলিত করে সম্পূর্ণ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
জামিয়াতুল মুস্তাফার ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ দিগন্ত
আয়াতুল্লাহ আ‘রাফি তাঁর বক্তব্যের শেষে বলেন: জামিয়াতুল মুস্তাফার মূল মিশন হলো আহলে বাইতের (আ.) শিক্ষাকে বিশ্বমানবের কাছে পৌঁছে দেওয়া। বিশ্বজগতের প্রতি জ্ঞানের এই দ্বার উন্মুক্ত করাই আমাদের প্রকৃত দায়িত্ব। এই ইতিহাসচেতনা ও বৈশ্বিক দৃষ্টি ভবিষ্যতে হাওজার নবযুগের ভিত্তি স্থাপন করবে।
আপনার কমেন্ট