হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি এ কথা বলেন জামিয়া আল-যাহরা (সা.আ.)-এর আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে গাজাবাসীর প্রতি সংহতি ও জায়নবাদী দখলদার বাহিনীর নৃশংসতার নিন্দা জানাতে আয়োজিত সমাবেশের প্রান্তে, হাওযা নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে।
নিপীড়িতের কণ্ঠ হয়ে দাঁড়ানোর গর্ব
ফাতিমা শারাফাত বলেন, “আল্লাহর কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা, তিনি আমাদের সেই তাওফিক দান করেছেন যে আমরা বিশ্বের নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠ হতে পেরেছি। এই পদক্ষেপ প্রমাণ করে, আমরা সঠিক পথে দৃঢ়ভাবে অবিচল রয়েছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এই সমাবেশে অংশ নিয়েছি একজন মানবাধিকার-সমর্থক নাগরিক হিসেবে। আমি বিশ্বাস করি, প্রতিটি কণ্ঠস্বর সচেতনতার একটি বীজ রোপণ করতে পারে। আমাদের লক্ষ্য হলো—শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবতার বার্তা বিশ্বজুড়ে পৌঁছে দেওয়া; যা কোনো সীমান্ত মানে না, বরং সমগ্র মানবজাতির অন্তর্গত। গাজার নিপীড়িত নারী ও শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর এই আহ্বানই আমাদের মানবতার প্রকৃত পরিচয়।”
“না অন্যায়কে, না দখলকে — হ্যাঁ মানবতাকে”
ফাতিমা শারাফাত বলেন, “আমাদের স্লোগান হলো— ‘না অন্যায়কে, না দখলকে—হ্যাঁ মানবতাকে।’ মানুষ হওয়া আমাদের প্রথম ফরজ। মানবতা কোনো ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ নয়। একদিন বিশ্ব বুঝবে, নিপীড়িতের পক্ষে দাঁড়ানো মানেই সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো।”
তিনি দুঃখের সঙ্গে বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, আমরা আমাদের নিজ ভূমি কাশ্মীরে গাজার মানুষের পক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলতে পারি না। কিন্তু আমরা নীরব নই। আমরা প্রতিরোধ করব, দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকব, এবং ইনশাআল্লাহ একদিন বিজয় আমাদেরই হবে।”
শহীদরা মৃত নন — তাঁরা জীবিত
কাশ্মীরি এই শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের বিশ্বাস, যারা আল্লাহর পথে সংগ্রাম করে শহীদ হন, তাঁরা কখনো মৃত নন; বরং তাঁদের আত্মা জীবিত থাকে আল্লাহর কাছে সম্মানিত অবস্থায়। ”তিনি কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করেন —
> وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ
“তুমি কখনোই মনে কোরো না যে, যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়েছে তারা মৃত; বরং তারা জীবিত, তাদের প্রতিপালকের কাছে তারা রিযিকপ্রাপ্ত।” (সূরা আলে ইমরান, আয়াত ১৬৯)
তিনি বলেন, “এই আয়াত আমাদের শেখায়— শহীদেরা শুধু একটি জাতির নয়, বরং সমগ্র মানবতার আত্মত্যাগের প্রতীক।”
ফাতিমা শারাফাতের কবিতা: “We Stand with Palestine”
সাক্ষাৎকারের শেষ মুহূর্তে ফাতিমা শারাফাত তাঁর নিজস্ব রচনা পাঠ করেন, যা গাজার জনগণের প্রতি ভালোবাসা ও প্রতিরোধের চেতনা প্রকাশ করে — O Al-Aqsa you are our pride We gonna tell this world, You have been occupied. It’s an honor to be by your side, Their heinous crimes won’t be hide. This massacre won’t go in vain, Let this world know your pains. O the martyrs of Palestine, Your sacred blood is divine. We, the followers of Imam Hussain, Till our last breath will stand with Palestine.
অর্থ: আল-আকসা, তুমি আমাদের গর্ব। আমরা এই পৃথিবীকে জানাতে চাই—তুমি দখলকৃত পবিত্র ভূমি। তোমার পাশে থাকা আমাদের জন্য গৌরবের বিষয়। তাদের নিষ্ঠুরতা আড়াল করা যাবে না। এই হত্যাযজ্ঞ বৃথা যাবে না। দুনিয়াকে তোমার বেদনা জানতে দাও। হে ফিলিস্তিনের শহীদরা, তোমাদের রক্ত পবিত্র ও ঐশ্বরিক। আমরা ইমাম হুসাইন (আ.)-এর অনুসার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ফিলিস্তিনের পাশে থাকব।
মানবতা ও প্রতিরোধের চেতনা
ফাতিমা শারাফাত বলেন, “নিপীড়িতের পক্ষে দাঁড়ানো মানেই মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো। প্রতিরোধ কখনো পরাজিত হয় না, কারণ এটি ন্যায় ও সত্যের প্রতীক। শহীদেরা জীবিত, আর তাঁদের রক্তই আমাদের আগামী প্রজন্মের স্বাধীনতার প্রেরণা।”
তিনি গাজার জনগণ ও ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী সংগ্রামীদের বিজয় ও শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করেন।
আপনার কমেন্ট