হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, কারবালার প্রান্তর, ইতিহাসের সেই বেদনাবিধুর কিন্তু গৌরবময় অধ্যায়ে জ্বলে ওঠে এক অমর নাম — হযরত আবুল ফাজল আল-আব্বাস (আ.), বনি হাশেমের উজ্জ্বল চাঁদ। তাঁর বীরত্ব, আনুগত্য ও আত্মত্যাগের দৃষ্টান্ত মানবতার ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায় রচনা করেছে।
বর্ণিত হয়েছে যে, যতদিন পর্যন্ত হযরত আব্বাস (আ.) জীবিত ছিলেন, উমর ইবনে সাদের পুরো সেনাবাহিনীর কেউই সাহস পায়নি হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)-এর খেমার দিকে অগ্রসর হতে। শত্রুরা জানত, আল্লাহর এই সিংহসন্তানের সামনে টিকে থাকা অসম্ভব।
আশুরার দিনে, যখন ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শিবিরে শিশুদের তৃষ্ণায় কাতর আর্তনাদ আকাশে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল, তখন হযরত আব্বাস (আ.) এগিয়ে গেলেন ফোরাত নদীর তীরে — যেখানে চার হাজার সৈন্য পাহারায় ছিল, যেন কেউ পানি নিতে না পারে।
কিন্তু ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আব্বাস (আ.)-এর আগমনে সেই সৈন্যদল যেন স্রোতের মতো ছিটকে পড়ল। তাঁর আগমনেই পুরো শিবিরে ভয় ও হতবিহ্বলতা ছড়িয়ে পড়ে। চার হাজার যোদ্ধা — তারা ছিল না সাধারণ মানুষ, বরং অভিজ্ঞ সেনানী। তবুও, হযরত আব্বাস (আ.)-এর জ্যোতি ও রূহের মহিমার সামনে তাদের সাহস গলে গেল বরফের মতো।
হযরত আব্বাস (আ.) ছিলেন শুধু এক বীর যোদ্ধা নন — তিনি ছিলেন আনুগত্য, সাহস ও আত্মত্যাগের প্রতীক। তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতিফলিত হয়েছে ইমামের প্রতি নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও ঈমানের দৃঢ়তা।
কারবালার ইতিহাসে তাঁর নাম আজও উচ্চারিত হয় শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও চোখের অশ্রু নিয়ে —
যিনি তলোয়ার নয়, ত্যাগ দিয়ে জয় করেছিলেন মানবতার হৃদয়।
রিপোর্ট: হাসান রেজা
আপনার কমেন্ট