হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন হাবিব আব্বাসী বলেন, সুন্নি আলেম ও গবেষক ড. হাসান ফারহান আল-মালিকি তাঁর গ্রন্থ “القراءة وكتب القاعد المذهب الحنبلي نموذجاً” (হাম্বালি মাযহাবের ভিত্তিতে পাঠ ও গ্রন্থসমূহের বিশ্লেষণ)-এ এমন একটি ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন, যা ইসলামের প্রারম্ভিক যুগের একটি বিতর্কিত অধ্যায়ে নতুন দৃষ্টিকোণ এনেছে।
বইটির পৃষ্ঠা ৪৬-এ তিনি লিখেছেন, আলির (আ.) অনুসারীরা ওমরের বায়আতের সময় আবু বকরের বায়আতের সময়ের তুলনায় সংখ্যায় কম ছিল। কারণ তারা শুরু থেকেই আলি (আ.)-এর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। আলি (আ.) সেই ফিতনার প্রাথমিক ঘটনাগুলো বর্ণনা করেছিলেন, যা শেষ পর্যন্ত ফাতিমা (সা.)-এর ঘরে হামলার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছিল। এটি ঘটে আবু বকর-এর খিলাফতের প্রারম্ভে। কিছু সাহাবিকে, যারা আলি (আ.)-এর সঙ্গে ছিলেন, জোরপূর্বক আবু বকরের প্রতি বায়আত নিতে বাধ্য করা হয়েছিল। এই বিরোধ ও হামলার ঘটনা সহীহ সূত্রে প্রমাণিত।
মালিকি তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট করে বলেন, এই ঘটনাটি কেবল ঐতিহাসিক বিতর্ক নয়, বরং “সহীহ সনদ দ্বারা প্রমাণিত একটি বাস্তবতা।”
বইটির পাদটীকায় (ফুটনোটে) তিনি আরও লেখেন, আমি পূর্বে মনে করতাম, হযরত ফাতিমা (সা.)-এর ঘরে হামলার ঘটনা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি বিশ্বাস করতাম, তাঁর প্রতি কোনো অবমাননা ঘটেনি। কিন্তু গবেষণার পর দেখি, না—এর পক্ষে শক্তিশালী সহীহ সূত্র রয়েছে। এর একটি হলো, ইবনে আবি শাইবা তাঁর আল-মুসান্নাফ গ্রন্থে আসলাম মাওলা উমর থেকে সহীহ সনদে এই ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন।
ড. আল-মালিকির এই বক্তব্য ইসলামী ইতিহাসের প্রারম্ভিক যুগের ঘটনাবলিকে নতুনভাবে আলোচনায় এনেছে। তাঁর মতে, এই হামলা ও তার পরবর্তী রাজনৈতিক বিরোধ শুধু ইতিহাস নয়, বরং ইসলামী ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ আত্মসমালোচনার অংশ।
হযরত ফাতিমা (সা.) ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা এবং আহলে বায়তের অন্যতম শ্রদ্ধেয় সদস্য। তাঁর ঘরে হামলার ঘটনা নিয়ে মুসলিম ইতিহাসে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক বিদ্যমান। ড. মালিকির এই গবেষণা সেই বিতর্কে নতুন এক একাডেমিক আলো ফেলে দিয়েছে।
আপনার কমেন্ট