হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন সাঈদ সালেহ মির্জায়ী, নেতৃত্ব বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য, “অগ্রগামী ও আদর্শ হাওজা” শীর্ষক তৃতীয় ব্যাখ্যামূলক সভায় বলেন: হাওজা ইলমীয়াগুলোর পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একটি সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি অপরিহার্য। সভাটি কুমে অবস্থিত “মারকাজে ফিকহি সাহেবুল আমর (আ.জ)” কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্রের সর্বোচ্চ নেতা বহুবার সতর্ক করেছেন যে হাওজাগুলো যেন দৈনন্দিনতার ফাঁদে না পড়ে এবং সামাজিক, বৈজ্ঞানিক ও সভ্যতাগত পরিবর্তনের পেছনে না থাকে। এই সতর্কতা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য নয়, বরং সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রযোজ্য, যাতে তারা নতুন যুগের ধর্মীয় ও সভ্যতাগত প্রয়োজনের জবাব দিতে পারে।
নেতৃত্ব বিশেষজ্ঞ পরিষদের এই সদস্য আরও বলেন, প্রস্তাব করা হয়েছে যে ইসলামি হাওজাগুলোকে শুধু একটি ‘বৈজ্ঞানিক কেন্দ্র’ হিসেবে নয়, বরং ইসলাম ও শিয়াবাদের জন্য ‘মানবসম্পদ তৈরির ও সেবার কেন্দ্র’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা উচিত। এমন একটি কেন্দ্র, যার মিশন হলো সামাজিক ব্যবস্থার সৃষ্টি ও সভ্যতাগত চ্যালেঞ্জগুলোর সঙ্গে সক্রিয়ভাবে মোকাবিলা করা।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, সর্বোচ্চ নেতার দৃষ্টিতে, ইসলামি হাওজাগুলোকে বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক জিহাদের কেন্দ্র হতে হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি হাওজাগুলোর সামনে নতুন দিগন্ত উন্মুক্ত করে এবং তাদের সভ্যতাগত ভূমিকা পুনরুজ্জীবিত করে।
আয়াতুল্লাহ আ’রাফি ও হাওজা ব্যবস্থাপনা দলের সফল প্রচেষ্টা
হুজ্জাতুল ইসলাম সালেহ মির্জায়ী বলেন, কিছু লোক যথাযথ তথ্য ছাড়াই ইসলামি হাওজা ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করে। অথচ পরিবর্তন আনার অনেক প্রস্তাব ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিক নথি ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনার আকারে গৃহীত হয়েছে। আয়াতুল্লাহ আ’রাফি এবং ব্যবস্থাপনা দল পরিবর্তনের জন্য বহু নীতি ও নথি প্রণয়ন করেছেন। আমাদের উচিত যথাযথ তথ্য প্রচারের মাধ্যমে প্রকৃত অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরা।
আজকের ইসলামি হাওজা সফল, তবে আরও অগ্রগামী হতে হবে
তিনি সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন: নেতা বর্তমান হাওজাকে সফল মনে করেন, তবে জোর দেন যে ভবিষ্যতে এটি আরও অগ্রগামী ও আদর্শ হতে হবে। তাই পরিবর্তনের দৃষ্টিভঙ্গি বর্তমান সাফল্যকে অস্বীকার করা নয়।
তিনি যোগ করেন, অনেকে মনে করেন আজকের হাওজাগুলো স্থবির হয়ে পড়েছে এবং পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না, কিন্তু বাস্তবতা তা নয়। ইসলামি হাওজাগুলোর অসাধারণ সম্ভাবনা রয়েছে এবং রূপান্তরের মাধ্যমে তারা ইসলামি বিপ্লব ও বৈশ্বিক শিয়াবাদের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম হবে।
তিনি আরও বলেন, পরিবর্তন তখনই সম্ভব যখন লক্ষ্য, সুযোগ, বাধা এবং সাফল্যগুলোর যথাযথ বিশ্লেষণ করা হবে। তখনই ইসলামি হাওজাগুলো দ্বিতীয় ধাপের ইসলামি বিপ্লবে তাদের ঐতিহাসিক ও সভ্যতাগত ভূমিকা পালন করতে পারবে।
সর্বোচ্চ নেতার দৃষ্টিতে “গফতেগু” (বক্তৃতা/আলোচনা) ও তার বাস্তবায়নের উপায়
সালেহ মির্জায়ী বলেন, সর্বোচ্চ নেতা গফতেগুকে এমন এক চিন্তা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, যা অর্থবহ, সত্যভিত্তিক, চিন্তামূলকভাবে বিস্তৃত ও প্রেরণাদায়ক। গফতেগু-সৃষ্টি মানে হলো এমন এক সাধারণ ও প্রভাবশালী চিন্তা তৈরি করা, যা সমাজে প্রচলিত হয় এবং জনগণের বিশ্বাসে পরিণত হয়।
তিনি অতীতের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে বলেন, সর্বোচ্চ নেতা অতীতে জোর দিয়েছেন যে পারমাণবিক শক্তির মতো বিষয়গুলোকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে নয়, বরং জাতীয় বিশ্বাসে পরিণত করতে হবে। যখন জনগণ কোনো ধারণায় বিশ্বাস স্থাপন করে, তখন সেই গফতেগু বা চিন্তাধারা স্থায়ী হয়ে যায়।
আপনার কমেন্ট