হাওজা নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদন অনুযায়ী: হাওজা ইলমিয়ার পরিচালক আয়াতুল্লাহ আ’রাফি ঘোষণা করেছেন যে, মহান মারাজাগণের ও হাওজা ইলমিয়ার উচ্চ পরিষদ, এবং সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ও প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়ে, দ্বিতীয় ফাতেমিয়া উপলক্ষে ১৪০৪ সালের আবান মাসের ২৯ তারিখ থেকে আজার মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত (হিজরি ১৪৪৭ সালের জামাদিউল উলা ২৯ থেকে জামাদিউস সানিয়া ৭) হাওজার উচ্চস্তর, খারিজ স্তর এবং বিশেষায়িত কেন্দ্র ও কমপ্লেক্সগুলো বন্ধ থাকবে।
আয়াতুল্লাহ আ’রাফির ফাতেমিয়া শোক ও প্রচারণা দশক উপলক্ষে বার্তা:
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য, এবং দোয়া ও সালাম আমাদের নেতা হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের প্রতি।
যারা আল্লাহর বার্তাগুলো পৌঁছে দেয়, আল্লাহকেই ভয় করে এবং তাঁর ছাড়া আর কাউকে ভয় করে না; এবং আল্লাহই যথেষ্ট হিসাব গ্রহণকারী।
(সূরা আহযাব, আয়াত ৩৯)
আমি বিশ্বনারীর নেতা, পবিত্রতা ও মর্যাদার প্রতীক, শালীনতা ও হিদায়াতের আদর্শ, হযরত সিদ্দিকা তাহেরা ফাতিমা যাহরা (সা.)-এর শাহাদাতবার্ষিকীতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।
উপরোক্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফাতেমিয়ার দ্বিতীয় দশক উপলক্ষে হাওজার সব উচ্চ ও খারিজ স্তরের ক্লাস এবং বিশেষায়িত কেন্দ্রগুলো ২৯ আবান থেকে ৭ আজার পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
ফাতেমিয়া উপলক্ষে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:
ফাতিমা যাহরা (সা.)-এর নাম, পথ ও মহিমান্বিত চরিত্রকে জীবন্ত রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব।
তিনি তাঁর উজ্জ্বল চরিত্র ও নির্মল জীবনচর্যার মাধ্যমে মানবজাতিকে শিখিয়েছেন কীভাবে ঈমান, আখলাক ও আধ্যাত্মিকতার পথে জীবনযাপন করতে হয়। তাঁর ইমানি, ইবাদতপূর্ণ, আধ্যাত্মিক, নৈতিক, পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক দিকসমূহ মানবজাতির জন্য এক চিরন্তন আদর্শ।
আজকের যুগে — যেখানে আধুনিক জাহেলিয়াতের ঝড় বইছে — নারী, যুবসমাজ ও পরিবারগুলো বিশেষভাবে এই পবিত্র নারীর জীবনাদর্শে ফিরে আসার প্রয়োজন অনুভব করছে, যাতে শয়তানি দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং ঈমান, লজ্জাশীলতা ও পবিত্রতার মূল্যবোধকে দৃঢ় করা যায়।
আমাদের দায়িত্ব হলো সমসাময়িক সমাজ ও যুব প্রজন্মের সামনে এই আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি উন্মোচন করা।
নারী ও পরিবার বিষয়ে ইসলামী বিপ্লবের অর্জনসমূহ
ইসলামী বিপ্লব নারী ও পরিবার ক্ষেত্রে যে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে, তা যথাযথভাবে তুলে ধরতে হবে, এবং এই ক্ষেত্রে যে সমস্যা ও ঘাটতিগুলো রয়েছে, তা চিহ্নিত ও সমাধান করতে হবে।
মুসলিম নারী ও পবিত্র পরিবারের আদর্শ মডেল হলো পাশ্চাত্য নারী-পরিবার মডেলের বিকল্প — যা নিজস্ব মূল্য, মর্যাদা ও বৈশ্বিক গুরুত্ব বহন করে। এই মডেলকে বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার সঙ্গে বিশ্বে উপস্থাপন করা উচিত। এই দায়িত্বে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে মহিলা আলেম ও মহিলা মুবাল্লিগদের।
ইসলামী বিপ্লবের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ
আজকের যুগে, ইসলামী বিপ্লবের বরকতে — এবং ইরানের জনগণ, শহিদ ও মুজাহিদদের ত্যাগের ফলে,
এবং ইমাম খোমেনি (রহ.) ও বর্তমান মহান রাহবার (মদ্যিল্লাহুল আলী)-এর নেতৃত্বে — ইসলামী শিক্ষা ও চিন্তাধারা প্রচারের অসাধারণ সুযোগ তৈরি হয়েছে।
তবে একইসঙ্গে ইসলামী ও জাতীয় পরিচয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও হুমকি বিদ্যমান — যা এক জটিল, বহুমাত্রিক সংগ্রাম সৃষ্টি করেছে সত্য ও মিথ্যার মধ্যে।
এ অবস্থায় আলেম সমাজের দায়িত্ব হলো দাওয়াত, প্রচার, সত্যনিষ্ঠ ব্যাখ্যা ও বুদ্ধিবৃত্তিক জিহাদ পরিচালনা করা, এবং সমাজের বিশ্বাস, নৈতিকতা ও যুব প্রজন্মের ইসলামী পরিচয় রক্ষায় সচেষ্ট থাকা।
ইসলামি নেতৃত্ব ও জাতির দায়িত্ব
ইলাহি নেতৃত্ব (বেলায়াত) ও ধর্মীয় মারজিয়াত ইসলামের স্তম্ভ এবং ইরানের স্বাধীনতা ও মর্যাদার মূলভিত্তি।
এটি রক্ষা ও শক্তিশালী করা অপরিহার্য।
তদ্রূপ, জনগণ — বিশেষ করে যুবসমাজ — দেশের ও ইসলামের প্রকৃত সম্পদ।
আমাদের কর্তব্য তাদের সেবা করা এবং তাদেরকে সেই পথে এগিয়ে নিতে সহায়তা করা, যাতে তারা ইসলামী ইরানের স্বাধীনতা ও মর্যাদার পতাকা উঁচু রাখতে পারে।
আমি আশা করি ইরানের মহান জাতি, এর সচেতন যুবসমাজ ও গৌরবময় নারীরা ইসলামী ইরানের স্বাধীনতা, গৌরব ও ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষার অগ্রদূত হবেন এবং ইসলামী বিপ্লবকে গৌরবের শীর্ষে পৌঁছে দেবেন।
আপনার কমেন্ট