হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর ৩৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় ভাষণকালে তিনি এ কথা বলেন। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, “ইমাম খোমেনী (রহ.)-এর নেতৃত্বে সংঘটিত ইসলামী বিপ্লবের প্রভাব আজ সারা বিশ্বে দৃশ্যমান।”
তিনি বলেন, “বৈশ্বিক অঙ্গনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবের ব্যাপক পতন এবং জায়নবাদীদের প্রতি বিশ্বব্যাপী ঘৃণার বিস্তার—এ সবই তাঁর নেতৃত্বে সংঘটিত বিপ্লবের ফল।”
“বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বেই পশ্চিমা মূল্যবোধের প্রতি বিতৃষ্ণার এক নতুন আন্দোলন দেখা যাচ্ছে; এমন যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করেছিলেন ইমাম খোমেনী (রহ.),” যোগ করেন তিনি।
গত কয়েক দশক ধরে ইসলামী বিপ্লবের বিরুদ্ধে বিদেশী শক্তিগুলোর ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে ইসলামী বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য বিপ্লবের তুলনায় ইসলামী বিপ্লবের বিরুদ্ধে যত ষড়যন্ত্র হয়েছে, তা নজিরবিহীন।”
“কিন্তু ইসলামী প্রজাতন্ত্র সকল ষড়যন্ত্র ও শত্রুতাকে মোকাবিলা করে দৃঢ়তার সঙ্গে টিকে আছে,” বলেন আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী।
তিনি বলেন, ইসলামী বিপ্লব পশ্চিমা বিশ্বকে হতবাক করেছিল এবং এরপর থেকে ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থা স্থিতিশীলতা ও শক্তির সঙ্গে বিকশিত হয়েছে।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ও প্রধান দাবি হলো, ইরানের কোনো পারমাণবিক শিল্প থাকা উচিত নয়। তাদের এসব অযৌক্তিক দাবির জবাব আমাদের কাছে পরিষ্কার—এ ব্যাপারে তারা কিছুই করতে পারবে না।”
“পারমাণবিক শিল্প একটি মৌলিক শিল্প। বহু বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রই পারমাণবিক প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণই পারমাণবিক ইস্যুর মূল, আর শত্রুরা এই সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়াকেই বাধাগ্রস্ত করতে চায়,” বলেন তিনি।
ইসরাইলি অপরাধ প্রসঙ্গে
ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম দেশগুলোর ভূমিকা প্রসঙ্গে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, “ফিলিস্তিন ইস্যুতে আজ মুসলিম সরকারগুলোর দায়িত্ব অনেক বেশি। আজ নম্রতা, কূটনৈতিক ভদ্রতা বা নিরপেক্ষতা প্রদর্শনের সময় নয়। আজ নিশ্চুপ থাকার দিন নয়।”
তিনি ইসরাইলের বর্বরতা সম্পর্কে বলেন, “তারা বোমা ও গুলি করে নিরীহ মানুষ হত্যা করছে। মানুষ কত নৃশংস ও নিষ্ঠুর হতে পারে! যুক্তরাষ্ট্র এই অপরাধের সরাসরি সহযোগী এবং তাদের এ অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করতে হবে।”
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “কোনো মুসলিম দেশ যদি কোনোভাবে এই জায়নবাদী শাসনকে সমর্থন করে, তাহলে তাদের ইতিহাসে চিরকালের জন্য কলঙ্কিত হয়ে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকারগুলো যেন বুঝতে ভুল না করে—ইসরাইলের ওপর নির্ভরতা কারও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে না। এটি ঐশ্বরিক বিধান অনুযায়ী ধ্বংসের পথে এগোচ্ছে এবং ইনশাআল্লাহ, এর পতন আর বেশি দূরে নয়।”
আপনার কমেন্ট