হাওজা নিউজ এজেন্সি: ইকনাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “ইমাম হুসাইন (আ.) তাঁর বিপ্লবের পেছনে নানা কারণ উল্লেখ করেছেন—যার মধ্যে রয়েছে রাসূল (সা.)-এর উম্মাহর সংস্কার, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ, অপমান বর্জন, ইয়াজিদের মতো মানুষের কাছে বায়আত না দেওয়া এবং নবীজির সুন্নাহ পুনরুজ্জীবন। এসব কারণের বৈচিত্র্য প্রমাণ করে, তিনি সমাজের বহুস্তরীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছিলেন।”
কারাআতি বলেন, “আজকের দিনে ইমাম হুসাইন (আ.)-এর আদর্শ অনুসরণের প্রথম ধাপ হলো—নিজের ব্যক্তি বা সামাজিক সমস্যা চিহ্নিত করা। তারপর প্রশ্ন করা—এই পরিস্থিতিতে ইমাম হুসাইন (আ.) কী করতেন?”
তিনি বলেন, “কারবালার ঘটনাবলিকে যদি একটি মূল চেতনায় সংক্ষেপ করা হয়, তা হবে ‘দায়িত্ববোধ’। এমনকি হজ মৌসুমে হজ ত্যাগ করে ইরাকের জনগণের আহ্বানে সাড়া দেওয়া ছিল তাঁর কাছে দায়িত্ব পালন। জনগণ তাঁকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানোয়, তিনি সেই আমানতের প্রতি অবিচার করেননি।”
আধুনিক সমাজে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানকে সম্মান জানানো হলেও বাস্তব জীবনে দায়িত্ববোধ উপেক্ষিত হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। “আজ অনেকে ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনে আগ্রহী, কিন্তু দায়িত্ব থেকে পালিয়ে যায়। অথচ ইমাম হুসাইন (আ.) আমাদের শিক্ষা দেন—প্রত্যেক ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই প্রকৃত ইবাদত সম্পন্ন হয়।”
তিনি সাম্প্রতিক এক উদাহরণ দিয়ে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ১২ দিনের হামলার সময়, এক টিভি উপস্থাপক সম্প্রচারে অবিচল ছিলেন, এক পেশাদার রুটি প্রস্তুতকারী ভাই হারানোর পরও কাজে ফিরে যান—এটাই আশুরার শিক্ষা অনুযায়ী দায়িত্ববোধের উদাহরণ।”
কারাআতি বিবি যায়নাব (সা.)-এর বিখ্যাত উক্তি—“আমি সৌন্দর্য ছাড়া কিছুই দেখিনি”—উল্লেখ করে বলেন, “এই বক্তব্য দায়িত্ব পালনের গৌরবকে তুলে ধরে। সন্তান ও স্বজন হারানোর বেদনা তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা ঈমানী দায়িত্ব পালনের পথে ঘটে।”
তিনি আরও বলেন, “আব্বাস (আ.)-এর সেই অমর বাণী—‘আল্লাহর কসম, যদি আমার ডান হাত কেটে ফেলো, তবুও আমি দ্বীন রক্ষার দায়িত্ব থেকে সরে আসব না’—সত্যিকার ত্যাগ ও দৃঢ়তার চিত্র তুলে ধরে। এমনকি পরিবারে রোজগারের জন্য পরিশ্রম করতে গিয়ে কেউ মারা গেলে হাদীস অনুযায়ী তাকেও শহীদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়—কারণ তিনিও আল্লাহর দেওয়া দায়িত্ব পালন করছিলেন।”
আপনার কমেন্ট