রবিবার ২৭ জুলাই ২০২৫ - ১১:০৪
আরবাঈন ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বার্তা প্রচারের একটি বৈশ্বিক মাধ্যম: কোমের সংসদ সদস্য

ইসলামী পরামর্শদাতা পরিষদে কোমবাসীর প্রতিনিধি হুজ্জাতুল ইসলাম সাইয়্যেদ মাহদী রাওয়ানবাখশ আরবাঈন যিয়ারতকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ঘটনাবলি এবং ইমাম হুসাইন (আ.) ও আশুরার বার্তা প্রচারের একটি আন্তর্জাতিক মাধ্যম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: তিনি কোমের ইমাম কাজিম (আ.) ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে “খাদিমুল রেজা (আ.)” প্রতিনিধিদলের সেবকদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন।

রাওয়ানবাখশ বলেন, “আজ আরবাঈন একটি বৈশ্বিক গণমাধ্যমে রূপ নিয়েছে—আহলে বাইত (আ.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও ঐক্যের এক ব্যতিক্রমী অভিব্যক্তি। এটি ইমাম হুসাইন (আ.)-এর অমর বার্তার এক জীবন্ত সাক্ষ্য।”

ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পরিচয় ছড়িয়ে দেওয়া—ইমাম মাহদী (আ.)-এর জুহুরের ভূমিকা
রাওয়ানবাখশ বলেন, “রেওয়ায়েতে এসেছে—ইমাম মাহদী (আ.) যখন জুহুর করবেন, তখন তিনি বলবেন: ‘হে মানব জাতি! আমার পিতামহ হুসাইনকে তারা পিপাসার্ত অবস্থায় শহীদ করেছিল।’ এটি প্রমাণ করে, সে সময় ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পরিচয় মানুষের কাছে জানা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।”

তিনি বলেন, “তাই যত বেশি আমরা আজ ইমাম হুসাইন (আ.)-এর পরিচয় ও বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরব, তত দ্রুত আমরা প্রতিশ্রুত সেই জুহুরের যুগের নিকটবর্তী হব।”

আধ্যাত্মিক একাগ্রতা—আয়াতুল্লাহ বাহজত (রহ.)-এর উপদেশ
রাওয়ানবাখশ নামাজে আধ্যাত্মিক মনোযোগ ও একাগ্রতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মরহুম আয়াতুল্লাহ বেহজাত (রহ.) নামাজের আগে তিনটি সালাম পাঠের পরামর্শ দিয়েছেন—ইমাম আলী (আ.), ইমাম হুসাইন (আ.) এবং ইমাম মাহদী (আ.)-এর প্রতি। এতে ইবাদতে হৃদয়ের উপস্থিতি বৃদ্ধি পায়।

কারবালার শিক্ষাই প্রতিরোধের প্রেরণা
তিনি বলেন, “যদি ইমাম হুসাইন (আ.) আত্মসমর্পণ করতেন, তবে কারবালা ইতিহাসে চিহ্নিত হতো না। তিনি প্রতিরোধের পথ বেছে নিয়েছিলেন—আর আজ ইরানি জাতিও সেই পথ অনুসরণ করছে। আমরা আত্মসমর্পণকারী নই, আমরা দৃঢ় অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা জাতি।”

কারবালা থেকে বিশ্ব ন্যায়ের পথে অগ্রযাত্রা
রাওয়ানবাখশ তাঁর বক্তব্যে দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, “প্রতিরোধের এই চেতনা ইনশাআল্লাহ অব্যাহত থাকবে। কারবালা থেকে হোয়াইট হাউস পর্যন্ত আমাদের ন্যায়বিচারের আহ্বান পৌঁছাবে। আমাদের সময়ের ইয়াজিদ ও শীমার যেন জেনে রাখে—আমরা ইমাম মাহদী (আ.)-এর আগমনের প্রতীক্ষায় আছি এবং সেই প্রতিশ্রুত দিন আসন্ন।”

ইমাম খোমেইনি গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই প্রাজ্ঞ শিক্ষাবিদ আরবাঈন যিয়ারতের সেবকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “তাঁরাই আশুরার চেতনাকে জীবন্ত রাখছেন এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও আধ্যাত্মিক সমাজের ভিত্তি তৈরি করছেন।”

আরবাঈন আজ শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় ঘটনা নয়, বরং এটি বিশ্বব্যাপী ন্যায়, প্রতিরোধ ও আধ্যাত্মিক চেতনার প্রতীক হয়ে উঠেছে। এটি ইমাম হুসাইন (আ.)-এর বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার শক্তিশালী মাধ্যম এবং প্রতিশ্রুত ইমাম মাহদী (আ.)-এর জুহুরের প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha