হাওজা নিউজ এজেন্সি: আতওয়ান তার বিশ্লেষণ “রায় আল-ইয়াওম” পত্রিকায় প্রকাশিত করেছেন, যেখানে হিজবুল্লাহ সংসদীয় ব্লকের প্রধান হাজি মোহাম্মদ রাদ-এর বক্তব্যকে তুলে ধরে— “নিরস্ত্রীকরণ মানে ইসরায়েলি ও মার্কিন নির্দেশে আত্মহত্যা ও বিশ্বাসঘাতকতা”— যা প্রতিরোধ আন্দোলনের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, লেবাননের রাষ্ট্রপতি জোসেফ আউন এবং প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম তড়িঘড়ি করে মার্কিন প্রতিনিধি টম বারাক-এর প্রস্তাব গ্রহণ করে এই ষড়যন্ত্রের অংশীদার হয়েছেন, যা দেশকে নতুন গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
আতওয়ান উল্লেখ করেছেন, পূর্ববর্তী মার্কিন দূত আমোস হকস্টাইন লেবাননকে মিথ্যা শান্তিচুক্তি ও সন্ত্রাসী হামলার মাধ্যমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন, আর বর্তমান দূত বারাকও হিজবুল্লাহ ধ্বংসের মাধ্যমে লেবাননকে স্বাভাবিকীকরণের পথে ঠেলে দেওয়ার ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, প্রকৃত হুমকি আসে না দক্ষিণ বৈরুতের মোটরসাইকেল মিছিল বা প্রতিরোধের শ্লোগান থেকে, বরং তাদের কাছ থেকে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করে রক্তাক্ত গৃহযুদ্ধে নিমজ্জিত করতে চায়। ইরাক ও লিবিয়ায় ‘গণতন্ত্র’ ও ‘মানবাধিকার’ সুরক্ষার নামে যে রাষ্ট্রধ্বংসের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে, সেই একই পরিকল্পনা লেবাননে প্রয়োগের চেষ্টা চলছে।
আতওয়ান আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেছেন, মার্কিন-ইসরায়েলি মদদপুষ্ট শক্তিগুলো এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারবে না এবং তাদের পরিণতি কঠোর হবে। তিনি বলেন, লেবাননের সেনাবাহিনীর সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশপ্রেমিক সদস্যরা প্রতিরোধের পাশে থেকে সম্মান ও সাহসের সঙ্গে লড়াই চালাবেন।
তিনি আরো জানিয়েছেন, হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণের আলোচনায় শিয়া মন্ত্রীদের মন্ত্রিসভা বর্জন সরকারের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এবং জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি “তাইফ চুক্তি”কে দুর্বল করেছে, যা একসময় লেবাননকে স্থিতিশীল রাখত।
আতওয়ান মার্কিন-ইসরায়েলি ব্যর্থতার ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন—
আমেরিকা ইরাক ও আফগানিস্তানে পরাজিত হয়েছে;
ইয়েমেনি যোদ্ধারা তাদের নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর মর্যাদা ধ্বংস করেছে;
ইসরায়েল ২০০০ ও ২০০৬ সালে লেবাননে এবং সাম্প্রতিক গাজা সংঘাতে পরাজিত হয়েছে;
ইরানের সঙ্গে চলা ১২ দিনের যুদ্ধে তাদের গুরুত্বপূর্ণ শহর ও বন্দরের ব্যাপক ক্ষতি ঘটেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, লেবাননের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী দ্রুত ভুল সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে এসে সেনাবাহিনী, জনগণ ও প্রতিরোধ—এই “সোনালী সমীকরণ”-এ ফিরে আসবেন, যাতে দেশ নতুন কোনো ধ্বংসাত্মক মার্কিন-ইসরায়েলি ফাঁদে না পড়ায়।
শেষে আতওয়ান স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ইসরায়েল ও আমেরিকার সাম্প্রতিক সব যুদ্ধে ব্যর্থতা এবং হিজবুল্লাহর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যভেদী ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতে তেলআবিব, সামরিক সদর দফতর ও বিশ্বের বৃহত্তম গোয়েন্দা কেন্দ্র ইউনিট ৮২০০-তে সরাসরি আঘাতের মাধ্যমে প্রতিরোধের অপরাজেয়তা প্রমাণিত হয়েছে।
আপনার কমেন্ট