হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, মুস্তাদরাক আল-হাকিম নিশাপুরীসহ বিভিন্ন ইসলামী গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে, নবী করিম (সা.) ওয়াইস কারানি (রহ.) সম্পর্কে বলেন—তিনি এই উম্মতের "রাহিব", আল্লাহভীরু ইবাদতগোত এবং খাইরুত তাবি’ঈন তথা তাবিঈনদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ।
সিফফিন যুদ্ধ ও ওয়াইস কারানি (রহ.)
সিফফিন যুদ্ধে আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আ.)-এর সেনাদের মধ্যে ওয়াইস কারানি (রহ.)-এর উপস্থিতি ইতিহাসে বিশেষভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে।
আবদুর রহমান ইবনে আবি লাইলা বর্ণনা করেন, একদিন মুআবিয়ার সেনাদের একজন জিজ্ঞেস করল:
“তোমাদের মধ্যে কি ওয়াইস কারানি আছেন?”
উত্তরে হযরত আলীর (আ.) সাহাবিরা বললেন, “হ্যাঁ।” তখন সে ঘোষণা করল:
“আমি নবীজি (সা.) থেকে নিজ কানে শুনেছি—তাবিঈনদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হচ্ছেন ওয়াইস কারানি।”
পরবর্তীতে সিফফিনে হযরত আলী (আ.) যখন শাহাদাতের জন্য বায়াত গ্রহণ করছিলেন, ঠিক নবীর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী ৯৯৯ জন উঠে আসেন। আলী (আ.) বললেন: “আর সেই একজন কোথায়? যাকে প্রতিশ্রুত করা হয়েছে?”
হঠাৎ দেখা গেল, এক ব্যক্তি পুরনো উলের চাদর গায়ে, মাথা মুন্ডানো, হাতে তরবারি ও পানির পাত্র নিয়ে এগিয়ে এলেন। তিনি বললেন: “আমি আপনার সঙ্গে মৃত্যুর জন্য বায়াত করছি।”
তিনি আর কেউ নন, ছিলেন ওয়াইস কারানি (রহ.)।
শাহাদাত ও মর্যাদা
ওয়াইস কারানি (রহ.) সেদিন হযরত আলী (আ.)-এর পাশে থেকে বীরত্বের সাথে যুদ্ধ করেন এবং শাহাদাত বরণ করেন। আমীরুল মুমিনীন (আ.) তাকবির দিয়ে ঘোষণা করেন: “আমার প্রিয় নবী (সা.) আমাকে বলেছিলেন—আমি তাঁর উম্মতের একজনকে পাবো, যার নাম ওয়াইস। তিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের দলে থাকবেন, শাহাদাত অর্জন করবেন, আর তাঁর শাফাআতে রবীআ ও মুযার গোত্রের সমানসংখ্যক মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে।”
উপসংহার
ওয়াইস কারানি (রহ.)-এর জীবন ত্যাগ, ঈমান, এবং নবীর পূর্বাভাসের বাস্তব প্রতিফলন। তিনি ছিলেন ইবাদত, বিনয় ও আনুগত্যের প্রতীক। ইসলামের ইতিহাসে তাঁর নাম এক উজ্জ্বল আলোকস্তম্ভ, যিনি তাবিঈনদের শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা লাভ করেছেন এবং শাহাদাতের মাধ্যমে সেই মর্যাদাকে অমর করে গেছেন।
আপনার কমেন্ট