হাওজা নিউজ এজেন্সি: আয়াতুল্লাহ আব্বাস কা’বির মতে, এসব শিক্ষা ইসলামী বিপ্লবের মিশন বাস্তবায়ন এবং মাহাদীভিত্তিক সমাজ ও সরকার প্রতিষ্ঠার ভিত্তি গড়ে দেয়।
পাঁচটি কৌশলগত শিক্ষা
১. সংকটময় সময়ে ইমামত ও উম্মাহ রক্ষা
ইমাম (আ.) কঠিন রাজনৈতিক পরিস্থিতিতেও ইমামত ও উম্মাহকে রক্ষার জন্য সংগ্রাম করেছিলেন।
আজকের শিক্ষা: ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানকে রক্ষা করা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
২. ইমামত ও উম্মাহর স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা
তিনি শিয়া সমাজের দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যতের জন্য কৌশল নির্ধারণ করেছিলেন।
আজকের শিক্ষা: ইসলামী প্রজাতন্ত্রের স্থায়িত্ব ও শক্তি সুনিশ্চিত করতে প্রয়োজন কৌশলগত পরিকল্পনা ও উম্মাহর নেতৃত্বের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক।
৩. শত্রুর ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করা
ইমাম (আ.) আহলে বায়তের আলো নিভিয়ে দেওয়ার সমস্ত চক্রান্তকে ব্যর্থ করেছিলেন।
আজকের শিক্ষা: জাতীয় শক্তি, সাংস্কৃতিক মূলধন ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা একত্র করে শত্রুর ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা।
৪. যোগ্য সহচর তৈরি করা
তিনি বিশ্বস্ত ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ সহচর গড়ে তুলেছিলেন, যারা পরবর্তীতে গায়েবতের যুগে ইমামের প্রতিনিধি হয়ে কাজ করবে।
আজকের শিক্ষা: তরুণ প্রজন্মের মধ্যে যোগ্য, মেধাবী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও ঈমানদার নেতৃত্ব তৈরি করা, যারা ইমাম মাহদী (আ.)-এর সৈনিক হতে প্রস্তুত থাকবে।
৫. ঈমান ও বাসিরাত গভীর করা
তিনি মানুষের হৃদয়ে আশা, ধৈর্য ও বাসিরাত জাগিয়ে তুলেছিলেন।
আজকের শিক্ষা: সঠিক ব্যাখ্যা ও সচেতনতার মাধ্যমে জাতিকে দৃঢ় করা, ঈমান বৃদ্ধি করা এবং সক্রিয়ভাবে মাহদী (আ.)-এর আগমনের প্রতীক্ষায় প্রস্তুত রাখা।
ইমাম আলী (আ.)-এর বাণী
“ইমামের আবির্ভাবের প্রতীক্ষায় থাকো এবং আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না; কারণ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ হলো আবির্ভাবের প্রতীক্ষা।” (বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড ৫২, হাদিস ১২৩)
বাস্তবায়নের কৌশল
ইমাম হাসান আসকারি (আ.) এই কৌশলগুলো বাস্তবায়ন করেছিলেন —
▫️আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রেখে,
▫️সূক্ষ্ম ও গোপন পরিকল্পনার মাধ্যমে,
▫️শত্রু-চিন্তন ও ঐক্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে,
▫️সচেতনতা ও নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে,
▫️নির্যাতন সত্ত্বেও ধৈর্য ও মর্যাদা বজায় রেখে,
▫️এবং বিশ্বব্যাপী আহলে বায়তের অনুসারীদের সাথে সম্পর্ক জোরদার করে।
ইমাম হাসান আসকারি (আ.)-এর নূরানী বাণী
“আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করো এবং আমাদের জন্য গৌরব হও, লাঞ্ছনা নয়। মানুষকে আমাদের প্রতি আকৃষ্ট করো এবং কুৎসা থেকে রক্ষা করো। আমাদের সম্পর্কে যা ভালো বলা হয়, আমরা তার যোগ্য; আর যা খারাপ বলা হয়, আমরা তার থেকে মুক্ত।” (বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড ৭৫, পৃ. ৩৭২)
ইমাম হাসান আসকারি (আ.)-এর শিক্ষাগুলো শুধু তাঁর যুগের জন্য নয়, বরং আজকের সমাজ ও ইসলামী আন্দোলনের জন্যও প্রাসঙ্গিক। এগুলো আমাদের শেখায়—ঐক্য, বাসিরাত, ধৈর্য ও সঠিক নেতৃত্বই মাহদীয় সমাজ প্রতিষ্ঠার মূল শর্ত।
আপনার কমেন্ট