হাওজা নিউজ এজেন্সি: পরিস্থিতি এমন ছিল যে, ইমাম (আ.) বাজার অতিক্রম করলে কসাইরা তাঁদের দোকানের মাংস কাপড়ে ঢেকে দিতেন, যাতে ইমামের দৃষ্টি পড়ে তাঁর দুঃখ পুনরায় জাগ্রত না হয়।
এ সময় এক অনুগত শিয়া কারবালার শহীদের হত্যাকারীদের বিচারের জন্য বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তিনি ছিলেন সেই মহান ব্যক্তি, যাকে আমীরুল মুমিনীন আলী (আ.) “কাইয়্যেস” (অর্থাৎ প্রজ্ঞাবান) উপাধি দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন মুখতার সাকাফি (রহ.), যিনি শুধু নামেই মুখতার নন, বরং ঈমান, আকিদা, চরিত্র, সাহস ও দৃঢ়তায়ও প্রকৃত মুখতার ছিলেন। ইয়াজিদ, ইবনে জিয়াদ ও ইবনে যুবায়েরের মতো শাসকদের সামনে তিনি কেবল মুখে নয়, বাস্তব কর্মের মাধ্যমে নিজের অবস্থান প্রকাশ করেছিলেন।
মুখতার সাকাফি (রহ.) কারবালার খুনিদের বিচার করেছিলেন। যখন উমর ইবনে সা'দ ও উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ নিহত হয়, তাঁদের অভিশপ্ত মাথা মদিনায় ইমাম জয়নুল আবেদীন (আ.)-এর দরবারে পাঠানো হয়। সে সময় ইমাম (আ.) খাদ্যগ্রহণে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁদের মাথা তাঁর সামনে আনা হলে তিনি হাসলেন, সিজদায়ে শুকর আদায় করলেন এবং মুখতার সাকাফির জন্য দোয়া করলেন।
এই ঘটনাই ৯ই রবিউল আউয়ালকে ঈদে জাহরা (সা.)-এর অন্যতম বিশেষ তাৎপর্য প্রদান করে। কারণ এই দিনেই উমর ইবনে সা'দ নরকে প্রেরিত হয়েছিল।
মুখতার সাকাফি (রহ.) ইমামের অন্তরে শোকের মাঝে আনন্দের সঞ্চার করেছিলেন এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করেছিলেন। সুতরাং ঈদে জাহরার অন্যতম শিক্ষা হলো— নিজেদের ইমামের সন্তুষ্টি অর্জন করা।
গায়বতের যুগে আমাদের দায়িত্ব
আজকের গায়বতের এই যুগে ইমাম জামানা (আ.জ.ফ.)-এর সন্তুষ্টি অর্জন করা প্রতিটি প্রকৃত শিয়া, প্রেমিক ও মুন্তাজিরের (প্রতীক্ষাকারীর) দায়িত্ব।
মাসুমীন (আ.)-এর বাণীর আলোকে ইমাম জামানার (আ.জ.ফ.) সন্তুষ্টি অর্জনের উপায়
▫️ইমাম জামানার (আ.জ.ফ.) মারেফাত অর্জন করা। কারণ তাঁর মারেফাত ছাড়া আল্লাহর মারেফাত সম্ভব নয়।
▫️ইমাম জামানার (আ.জ.ফ.) জুহুরের প্রতীক্ষা করা।
▫️তাঁর দ্রুত জুহুরের জন্য দোয়া করা।
▫️ইমামের গায়বতে দুঃখিত ও বিমর্ষ থাকা।
▫️তাঁর সাথে করা অঙ্গীকার ও বায়আতে অটল থাকা।
▫️তাকওয়া অবলম্বন করা ও গোনাহ থেকে দূরে থাকা। কেননা গোনাহ অপবিত্রতা, আর আহলে বাইত (আ.) অপবিত্রতা থেকে মুক্ত।
আপনার কমেন্ট