বৃহস্পতিবার ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১৭:০৯
বীর ও ঈমানদার ইয়ামানীদের সুদৃঢ় সংকল্প

ইয়ামানের সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও ১১ জন মন্ত্রী সহ সরকারের মোট ১২ জন নেতাকে হত্যা করার পর ইসরাইলী কাপুরুষের দল ভেবেছিল যে এইবার বোধহয় ইয়ামানীরা পিছু হটবে। কিন্তু না, সাহসী ও আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ইয়ামানী জাতি আগের চেয়েও আরও অধিক পরিমাণে ফিলিস্তিনীদেরকে রক্ষায় নিবেদিত হয়েছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, বীর ও ঈমানদার ইয়ামানীদের সুদৃঢ় সংকল্প।
এই মহান জাতির জনসংখ্যার সিংহভাগকে হত্যা করলেও তাঁরা তাঁদের ভাই মাজলুম ফিলিস্তিনীদেরকে সাহায্য করার পথ থেকে সরে যাবে না।
ইয়ামানের সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও ১১ জন মন্ত্রী সহ সরকারের মোট ১২ জন নেতাকে হত্যা করার পর ইসরাইলী কাপুরুষের দল ভেবেছিল যে এইবার বোধহয় ইয়ামানীরা পিছু হটবে। কিন্তু না, সাহসী ও আত্মসম্মানবোধসম্পন্ন ইয়ামানী জাতি আগের চেয়েও আরও অধিক পরিমাণে ফিলিস্তিনীদেরকে রক্ষায় নিবেদিত হয়েছে।

আর ঐদিকে তুরষ্ক, সৌদী আরব, জর্ডান, আযারবাইজান, কাতার, বাহরাইন, আরব আমিরাতের মতো দেশগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে নূন্যতম পর্যায়ের দৃঢ়তা দেখানো তো দূরে থাক, উল্টা দিনরাত ইসরাইলের পা চাটতে ব্যস্ত হয়ে আছে।
জিদেঔনের শকটসমুহ শিরোনামে বহু ঢাকঢোল পিটিয়ে ইসরাইলী হানাদার সেনাবাহিনীর তিনমাস ধরে চলা গাযা শহর দখলের অভিযানের ব্যর্থতা
IDF report said to find Israel made 'every possible mistake' in recent Gaza offensive | The Times of Israel https://share.google/nEUv9AweIMjoO38x5
আইডিএফের প্রতিবেদন: সাম্প্রতিক গাযায় হামলায় ইসরাইল সম্ভাব্য সবধরনের ভুল করেছে।
ইসরাইলী পত্রিকা দ্য টাইমস অব ইসরাইল:গত মে (২০২৫) থেকে অগাস্ট (২০২৫) পর্যন্ত গাযা শহর দখলের সামরিক অভিযান "গিদেওনস ক্যারিওটস" (জিদেঔনের শকটসমুহ) এর মুখ্য ও মূল লক্ষ্য সমূহ অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। 
ফাঁস হয়ে যাওয়া গোপন দলিল (ডকুমেন্ট) নথিপত্রও বলছে যে গাযা শহর দখলের ব্যাপারে 
অদক্ষ সাহায্য এবং ত্রাণ বিতরণ ও বন্টন প্রক্রিয়া ও তৎপরতা  এই অভিযান চলাকালে হামাসকে পিআর ক্যাম্পেইন চালানোয় সাহায্য করেছে।
ইসরাইলী হানাদার বাহিনী ভয় পেয়েছিল যে তারা গাযা দখলে অপ্রস্তুত!!!!!!

ইসরাইলী প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত এ খবর ও প্রতিবেদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা থেকে প্রমাণিত হয়ে যায় যে মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ও ন্যাটো অর্থাৎ পশ্চিমা দেশগুলোর সার্বিক সহায়তা, সাহায্য, সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা পেয়ে ইসরাইল প্রায় ২৩ মাস ধরে গাযায় আগ্রাসন, গণহত্যা ও সবধরনের  যুদ্ধাপরাধ ও মানবতা বিরোধী অপরাধ করেও মাত্র ৩৫০ বর্গ কিলোমিটারের ছোট একটি অঞ্চল গাযা দখল,হামাসকে পরাজিত, ধ্বংস ও উচ্ছেদ এবং ইসরাইলী যুদ্ধবন্দীদের উদ্ধার করতে পারেনি এবং পারছেও না।ইয়ামান,ইরাক ও লেবানন ব্যতীত সকল আরবদেশের সরকার সমূহ গাযাবাসীদের বিন্দু মাত্র সাহায্য তো করেই নি বরং তুরস্কের মতো এরাও ইসরাইলের সাথে গোপন ব্যবসায় বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে ও সাহায্য করছে। সৌদী আরবের ইয়ান্বু' বন্দরের উপকূলের কাছে গতকাল জেট ফুয়েল ভর্তি একটি ইসরাইলী জাহাজ যা উক্ত সৌদী বন্দর থেকে ঐ তেল নিয়ে যাচ্ছিল ইসরাইলের জন্য তা ইয়ামানের হুথিদের আক্রমণ ও হামলার শিকার হয়েছে!!! ইসরাইলের কঠোর নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্য,ওষুধ,পানীয় জল ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত ও তীব্র কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ গ্রস্ত গাযাবাসীদের অত্যন্ত করুণ ও মানবেতর অবস্থা সত্ত্বেও হামাস ও জিহাদে ইসলামীর বীর মুজাহিদরা প্রাণপণে জিহাদ ও সংগ্রাম করছে এবং ইসরাইলী হানাদার দখলদার বাহিনীর জিদেঔনের শকট সমুহের শিরোনামে টানা তিন মাস ধরে চলা গাযা শহর দখলের অভিযানকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ ও বিফল করে দিয়েছে। এটা কি ফিলিস্তিনী মুজাহিদদের বিরাট বড় সাফল্য ও বিজয় নয়?!!! কোথায় সিরিয়ার মুনাফিক তস্কর ডাকাত সন্ত্রাসী ও ইসরাইলের পা ও মাং চাটা ভৃত্য জূলানী গূলানীর সরকার ও তার দল এবং সুন্নী আরব ও অনারব মুসলিম দেশগুলোর সরকার ও জনগণ?!! তারা কেন তাদের শিয়া মুসলমান ভাইদের মতো ফিলিস্তিন ও গাযার মাযলূম মুস্তাযাফ (অত্যাচারিত নিপীড়িত) সুন্নী ভাইবোনদের সাহায্যার্থে জিহাদে অবতীর্ণ হচ্ছে না?!!!তাদের চেতনা ও ঈমান কি সম্পূর্ণ লোপ পেয়েছে যে এরফলে তারা ইসরাইল,মাযুরা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র),যুরা (যুক্তরাজ্য), ফাজুরা (ফ্রান্স) ও ন্যাটোর ভয়ে জিহাদ করা একদম ভুলেই গেছে?!!!
ফিলিস্তিনের ব্যাপারে সুন্নী মুসলমান আরব ও অনারব মুসলিম দেশগুলোর সরকার ও জনগণের এমন নির্লিপ্ততা,অমনোযোগিতা, নিষ্ক্রিয়তা ও গাফলতি আসলেই পবিত্র কুরআন ও মহানবীর (সাঃ) সুন্নাহর সুস্পষ্ট বিরোধী এবং এ জন্য দুনিয়া ও আখেরাতে ভয়ানক যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদের জন্য অপেক্ষা করবে যদি তারা ২৩ মাস ধরে নির্বিকার ও নিষ্ক্রিয় বসে থাকার পর ফিলিস্তিনীদের পক্ষে শিয়া মুসলমান ভাইদের সাথে ইসরাইলের বিরুদ্ধে জিহাদে অবতীর্ণ না হয়।আর জিহাদ না করলে তারাও ইসরাইলের অপরাধে শরীক হবে।ইউরোপীয় দেশগুলোয় বেশ কিছু সাধারণ মানুষ যারা বিধর্মী তারা পর্যন্ত প্রচণ্ড বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করছে।

এতে করে এ সব সুন্নী আরব অনারব মুসলিম দেশের সরকার ও জনগণের লজ্জিত হওয়া উচিত। এদের উচিত প্রচণ্ড বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে নিজ নিজ দেশের সরকার গুলোকে সন্ত্রাসী গণহত্যাকারী যুদ্ধাপরাধী ইসরাইলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য করা। তাই চুপচাপ নিষ্ক্রিয় ভাবে বসে থাকা অবৈধ ও হারাম।হামাস ও জিহাদে ইসলামীর মুজাহিদরা ২৩ মাস ধরে অবর্ণনীয় দু:খ-দুর্দশা,কষ্ট ও বিপদের মধ্যেও ইসরাইলকে পরাস্ত ও পর্যদুস্ত করে দিচ্ছে যার প্রমাণ হচ্ছে টাইমস অব ইসরাইলের এ প্রতিবেদন।
মুসলিম বিশ্বের চেতনা ফিরে আসুক এবং তারা জাগ্রত হোক ফিলিস্তিনী মুজাহিদদের এ সাফল্যের সুখবর শুনে।
উক্ত ইসরাইলী পত্রিকার এই রিপোর্টের শেষে বলা হয়েছে যে ইসরাইলী সামরিক কর্তৃপক্ষ এ রিপোর্টে উল্লেখিত গিদেঔনের শকট নামের ঐ সামরিক অভিযানের বেশকিছু সাফল্যের কথাও উল্লেখ করেছে যাতে তারা নিজেদের ব্যর্থতা কিছুটা ঢাকতে পারে। এটা অনেকটা ঐ অবস্থার মতো যে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র সমূহে বোমাবর্ষণ করার পর ট্রাম্প দাবি করে বলেছিল যে ইরানের সকল পারমাণবিক স্থাপনা সাফল্যের সাথে ধ্বংস করেছে ও গুঁড়িয়ে দিয়েছে মার্কিন বাহিনী। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা সংস্থা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেফরি ক্রুয্ বলেছিল:"মাযুরার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) বোমা বর্ষণে ইরানের ইউরেনিয়াম কর্মসূচি কয়েক মাসের জন্য পিছিয়ে গেছে।"
আর মাত্র অল্প কয়েক দিন আগে (২৩ অগাষ্ট) মাযুরার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পিট হেগসেথ দুজন নৌবাহিনীর দুজন উচ্চ পদস্থ অফিসার সহ মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের গোয়েন্দা সংস্থা প্রধান জেনারেল জেফরি ক্রুযকে বরখাস্ত করেছে।
তাই ঐ হতভাগা মার্কিন জেনারেলের মতো ইসরাইলী সেনাবাহিনী তিন মাস ধরে চলা গিদেঔন শকট অভিযানের ব্যর্থতা ফাঁস করার জন্য বেশ কিছু ইসরাইলী সামরিক কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করবে অচিরেই।
এভাবে গোপন প্রতিবেদন ফাঁস করার বিষয়টি থেকে যুদ্ধের ময়দানে ব্যর্থতার কথা প্রকাশিত হওয়া সহ ইসরাইলী সেনাবাহিনীর মধ্যকার তীব্র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও মতভেদের বিষয়টিও স্পষ্ট হয়ে যায়। ইসরাইলী সেনাবাহিনীর জিদিঔনের শকটসমূহ শিরোনামের এ অভিযানের ব্যর্থতার চেয়েও এর বড় ব্যর্থতা ও হযবরল অবস্থা হচ্ছে ইসরাইলী সেনাবাহিনীর এই গোপন প্রতিবেদন ফাঁস হওয়ার ঘটনা। দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ ইসরাইলী সেনাবাহিনী ও সমাজকে তীব্র ভাবে ক্লান্ত,শ্রান্ত,বিপর্যস্ত ও অবসাদগ্রস্ত করে ফেলেছে। আরো কিছু দিন যুদ্ধ স্থায়ী হলে দখলদার ইসরাইলী সেনাবাহিনী ও সমাজ নি:শ্বাস নিতে পারবে না এমনকি হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস ও গাযাবাসীকে হত্যা বা উচ্ছেদ করতে সক্ষম হলেও। হ্যাঁ গাযাবাসী কুরবানী হল মুসলিম বিশ্বের জন্য। কিন্তু ইসরাইলের শেষ রক্ষা নেই।গাযায় নিজের চাপানো যুদ্ধ ও আগ্রাসনেই ইসরাইলের দফা রফা হয়ে গেছে। ইসরাইল ৭অক্টোবর ২০২৩ এর সফল তূফানুল আকসা অভিযান এবং ২৩ মাস ধরে ফিলিস্তিনীদের প্রবল প্রতিরোধ সংগ্রাম, জিহাদ ও যুদ্ধে মৃত্যুপথযাত্রী।এই সন্ত্রাসী সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদের হোতা আগ্রাসী,যুদ্ধবাজ,শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্টকারী, ফিৎনা ফাসাদ সৃষ্টি কারী,যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধী এবং গণহত্যা ও প্রজন্ম হত্যাকারী এ রাষ্ট্রটির পতন ও ধ্বংস অনিবার্য এমনকি বেইমান বিশ্বাসঘাতক আরব ও অনারব মুসলিম দেশগুলোর সাহায্য,সমর্থন, সহযোগিতা ও সহায়তা পেয়ে পশ্চিমে মিসরের নীল থেকে পূর্বে ইরাকের ফুরাত পর্যন্ত এবং উত্তরে ফিলিস্তিন থেকে দক্ষিণে পবিত্র মক্কা ও মদীনা সহ হিজায অঞ্চল ও উত্তর সৌদী আরব পর্যন্ত গ্রেটার ইসরাইল গঠিত ও প্রতিষ্ঠিত হলেও।দু:খজনক ভাবে মুসলিম বিশ্ব কুম্ভকর্ণের নিদ্রা সুখে আচ্ছন্ন ও ঘুমিয়ে রয়েছে। অতএব  মুসলিম বিশ্বকে জাগতে হবে কুম্ভকর্ণের এ নিদ্রা থেকে।


রিপোর্ট: মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha