হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামী বর্ষপঞ্জির তৃতীয় মাস হলো রবিউল আউয়াল। এই মাস মুসলিম সমাজে বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ, কারণ এই মাসেই বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা.)-এর জন্ম হয়েছিল। বিশেষত ১৭ রবিউল আউয়াল তারিখটি ইসলামী ইতিহাসে এক তাৎপর্যমণ্ডিত দিন। এ দিনটি বিশ্বমানবতার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে আছে, কারণ এ দিনেই আল্লাহর শেষ ও শ্রেষ্ঠ রাসূল পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন।
ঐতিহাসিক পটভূমি:
১৭ রবিউল আউয়াল, খ্রিস্টীয় ৫৭০ সালের প্রায় ২২ এপ্রিল, মক্কার কুরাইশ বংশে হযরত আমিনা ও আব্দুল্লাহর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। তাঁর জন্মের পূর্বে বাবার মৃত্যু হয় এবং জন্মের কিছু বছর পর মায়ের মৃত্যুতেও তিনি এতিম হয়ে পড়েন। কিন্তু আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহে তিনি শৈশব থেকেই পবিত্র জীবনযাপন করেন এবং সত্য, ন্যায়, করুণা, দয়া ও ন্যায়পরায়ণতার মূর্ত প্রতীক হিসেবে গড়ে ওঠেন।
ধর্মীয় গুরুত্ব:
১৭ রবিউল আউয়াল শুধু রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মদিন হিসেবেই নয়, ইসলামী জগতে এটি এক পবিত্র দিন হিসেবে পালন করা হয়। শিয়া মুসলিমরা এ দিনটিকে বিশেষ তাৎপর্যের সাথে পালন করেন, কারণ এ দিনেই তাঁদের ষষ্ঠ ইমাম, ইমাম জাফর আস-সাদিক (আ.) জন্মগ্রহণ করেন। ফলে এই দিন দ্বিগুণ মর্যাদাপূর্ণ।
আধ্যাত্মিক শিক্ষা:
এই দিনের প্রকৃত তাৎপর্য হলো নবীর জীবন ও আদর্শকে স্মরণ করা এবং তাঁর শিক্ষা অনুসারে জীবনকে গড়ে তোলা। নবী করিম (সা.) মানবজাতির জন্য রহমতের প্রতীক ছিলেন। তিনি শান্তি, ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়পরায়ণতা ও কল্যাণের বার্তা দিয়েছেন। ১৭ রবিউল আউয়াল আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, মানবজীবনের প্রকৃত সফলতা নিহিত আছে তাঁর দেখানো পথে চলার মধ্যেই।
আধুনিক প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিকতা:
আজকের পৃথিবী ভ্রান্তি, বিভাজন ও অশান্তিতে ভরে গেছে। নবী করিম (সা.)-এর শিক্ষা ও চরিত্র মানবজাতিকে মুক্তির সঠিক দিশা দিতে পারে। ১৭ রবিউল আউয়াল তাই শুধু উৎসবের দিন নয়, বরং নবীর আদর্শে আত্মবিশ্লেষণ ও সমাজসেবার অঙ্গীকারের দিন।
ফলাফল: ১৭ রবিউল আউয়াল ইতিহাসে চিরস্মরণীয় দিন। এ দিন বিশ্বনবীর জন্মের মাধ্যমে মানবজাতি অন্ধকার থেকে আলোতে পথ খুঁজে পেয়েছিল। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করলেই ব্যক্তি, সমাজ ও বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তাই মুসলমানদের উচিত এ দিনের তাৎপর্য উপলব্ধি করে নবী করিম (সা.)-এর শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা।
রিপোর্ট: মাজিদুল ইসলাম শাহ
আপনার কমেন্ট