রবিবার ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ - ১১:৪০
১২ দিনের যুদ্ধে ১৬ জনেরও বেশি ইস্রায়েলি পাইলট নিহত হয়েছে

ইসলামিক রেভল্যুশনের নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনেয়ির সিনিয়র সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল ইয়াহিয়া রহিম-সাফাভি জানিয়েছেন, জায়নিস্ট শাসকদলের অন্তত ১৬ জন ইস্রায়েলি পাইলট ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধের সময় নিহত হয়েছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে সাফাভি বলেন, যুদ্ধের প্রথম কয়েক দিনে ইরানের বিমান প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা ব্যবস্থায় কিছু দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছিল, যা বর্তমানে মেরামত ও পুনর্গঠনের অধীনে রয়েছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, যুদ্ধের প্রথম দুই-তিন দিনে কিছু ঘাটতি ছিল, তবে চতুর্থ দিন থেকে শক্তির ভারসাম্য ইরানের দিকে ঝুঁকেছে এবং শেষ পর্যায়ে ইরান সম্পূর্ণ আধিপত্য স্থাপন করেছে। বিদেশি বিশ্লেষকদের মতে, প্রায় ৬০ শতাংশ আন্তর্জাতিক মূল্যায়নে ইরানকে বিজয়ী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

জেনারেল সাফাভি জোর দিয়ে বলেন, ইস্রায়েল তার ঘোষিত লক্ষ্য—ইরানকে অভ্যন্তরীণভাবে অস্থিতিশীল করা বা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো, সামরিক ও পারমাণবিক ক্ষমতা ক্ষুণ্ণ করতে—সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে, যেখানে ইরান তার নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, শত্রুর কমান্ড-এন্ড-কন্ট্রোল কেন্দ্র, বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং টার্মিনালগুলো লক্ষ্যবস্তু আঘাতপ্রাপ্ত হয়, যা অন্য পক্ষকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেছে।

উপদেষ্টা আরও জানান, ১৬ জনেরও অধিক ইস্রায়েলি পাইলট অপারেশনের সময় নিহত হয়েছে। এছাড়া শত্রু তার ৬০০–৬৪০টির বেশি বিমান প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে, যার ফলে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

সাফাভি বলেন, ইরান বর্তমানে বিমান ও মহাকাশ প্রযুক্তি পুনর্গঠন করছে এবং শক্তি বৃদ্ধি করছে। বিমান প্রতিরক্ষা, রাডার সিস্টেম, ক্ষেপণাস্ত্র এবং কিছু বিমান বাহিনী ইউনিট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও, নতুন কমান্ডার নিয়োগ এবং পুনর্গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতা দ্রুত পুনরুদ্ধার হয়েছে।

তিনি ঘোষণা করেন, ইরান কেবল তার শক্তি পুনর্গঠন করবে না, বরং আক্রমণাত্মক শক্তি সব ফ্রন্টে—বিমান, মহাকাশ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে—বৃদ্ধি করবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি শত্রু আবার আগ্রাসন চালায়, তেহরান আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখাবে।

উল্লেখ্য, ১৩ জুন ইস্রায়েল ইরানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ও অপ্রত্যাশিত আগ্রাসন চালায়, যা ১২ দিনের যুদ্ধে রূপ নেয়। এতে অন্তত ১,০৬৪ জন নিহত হয়, যার মধ্যে রয়েছে সামরিক কমান্ডার, পারমাণবিক বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিক।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে তিনটি ইরানি নিউক্লিয়ার স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। জবাবে, ইরানি সশস্ত্র বাহিনী কৌশলগত স্থাপনা এবং কাতারের আল-উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়, যা পশ্চিম এশিয়ার সবচেয়ে বড় মার্কিন সামরিক ঘাঁটি।

২৪ জুন, ইরান সফল প্রতিশোধী অপারেশনের মাধ্যমে ইস্রায়েলি শাসকদল ও মার্কিন আগ্রাসন বন্ধ করতে বাধ্য করে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha