শনিবার ১৮ অক্টোবর ২০২৫ - ১২:১০
গবেষণার ভূমিকা ছাড়া প্রচার কার্য ফলপ্রসূ হয় না

হাওজা ইলমীয়ার পরিচালক আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আরাফি জোর দিয়ে বলেছেন যে, গবেষণার প্রতি মনোযোগ দেওয়া শিক্ষা ও প্রচার কার্যক্রমে সফলতার একটি অপরিহার্য শর্ত। তিনি বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ গঠন ও চিন্তা উৎপাদনই গবেষণা বিভাগের কর্মকর্তাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ আলিরেজা আরাফি “প্রদেশ ও বিশেষ অঞ্চলের হাওজা গবেষণা বিভাগের ত্রয়োদশ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে” বক্তব্য রাখেন। এই অনুষ্ঠানটি “হাওজা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের আমিন হল”-এ অনুষ্ঠিত হয়। তিনি অনুষ্ঠানের আয়োজকদের, বিশেষ করে হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন আব্বাসি (হাওজার গবেষণা-বিষয়ক সহকারী)–এর প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, পবিত্র কোরআনের আয়াতসমূহে মনোযোগ দিলে বোঝা যায় আমরা মহান আল্লাহর কাছে কতটা নির্ভরশীল ও অভাবগ্রস্ত। আমাদের উচিত সর্বদা আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা করা যেন তিনি আমাদের হিদায়াত ও কল্যাণের পথে পরিচালিত করেন এবং আমাদের আত্মিকভাবে সমৃদ্ধ করেন।

হাওজার পরিচালক আরও বলেন, সৃষ্টিজগৎ ও মহাবিশ্বে “অস্তিত্বগত অভাব” (ফকরের আসল অর্থে) একটি মৌলিক বাস্তবতা, যা আমরা দৈনন্দিন জীবনে পরিচিত গরিবির ধারণা থেকে ভিন্ন। প্রকৃতপক্ষে, অস্তিত্বের নিজস্ব সত্তাই নির্ভরশীল; আমরা এই ক্ষণস্থায়ী জগতে গভীর অভাবে নিমজ্জিত। তবে একই সঙ্গে, সৃষ্টির অন্তর্নিহিত সেই পরিপূর্ণতাও একপ্রকার “ফকর” যা আল্লাহর প্রাথমিক অনুগ্রহ ও ফয়জ দ্বারা মর্যাদা ও গৌরব লাভ করে।

একমাত্র মুক্তির পথ-আল্লাহর ইবাদত ও দাসত্ব

তিনি বলেন, ধর্মের উদ্দেশ্যই হলো মানুষকে তার এই নির্ভরশীলতা ও অভাবের বাস্তবতা স্মরণ করানো, যাতে সে বুঝতে পারে যে, মুক্তি ও কল্যাণের একমাত্র পথ হলো মহান আল্লাহর দাসত্ব। প্রকৃত মানবিক পরিপূর্ণতা এই “ফকর”–এর উপলব্ধিতেই নিহিত। এজন্যই রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “আল-ফাকরু ফাখরি” — অর্থাৎ “অভাবই আমার গৌরব।”

আয়াতুল্লাহ আরাফি বলেন, এই “ফকর”–এর জ্ঞান ও উপলব্ধিরও বিভিন্ন স্তর রয়েছে। কেউ যদি তার এই নির্ভরতা জ্ঞান, অনুভূতি ও বুদ্ধিবৃত্তির মাধ্যমে গভীরভাবে অনুধাবন করতে পারে, তবে সে আধ্যাত্মিক “দর্শন” (শুহুদ)–এর উচ্চ স্তরে পৌঁছে যায়। যত বেশি একজন ব্যক্তির আত্মিক ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পায়, ততই সে আল্লাহর সামনে বিনয়ী ও নম্র হয়ে ওঠে।

শেষে তিনি বলেন, আমাদের কাজের মূল আত্মা হলো নিজেদের মধ্যে এই নির্ভরতা ও অভাবকে অনুভব করা। যখন আমরা তা বুঝতে পারব, তখনই আমরা প্রকৃত ইবাদতের পথে অগ্রসর হব। আমাদের দায়িত্ব হলো অন্যদেরও এই সত্য উপলব্ধি করানো এবং এ বিষয়ে যথাযথভাবে দাওয়াত ও শিক্ষা প্রদান করা।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha