শনিবার ১৮ অক্টোবর ২০২৫ - ১২:৪৪
হাওজার অস্তিত্বের দর্শন দুইটি প্রধান কাজের ওপর ভিত্তি করে

আয়াতুল্লাহ আরফি: প্রচারের গুরুত্ব যতই বেশি হোক না কেন, গবেষণার সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া তা ফলপ্রসূ হয় না।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, আয়াতুল্লাহ আরাফি হাওজার অস্তিত্বের মূল দর্শনকে দুইটি প্রধান কাজের প্রতি মনোযোগ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন:

প্রথমত: দক্ষ মানবসম্পদ গঠন-যেখানে শিক্ষা, গবেষণা এবং আত্মশুদ্ধিকে একে অপরের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে, যাতে যোগ্য ও সক্ষম ব্যক্তিত্ব তৈরি হয় এবং সমাজের বিভিন্ন প্রয়োজনের জবাব দেওয়া সম্ভব হয়।

দ্বিতীয়ত: হাওজাকে চিন্তাধারার উৎপাদনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে হবে; সেখানে নতুন ও মৌলিক ভাবনা উপস্থাপন করতে হবে এবং চিন্তা ও ধারণা বিকাশে মনোযোগ দিতে হবে।

হাওজার পরিচালক আরও বলেন, নিঃসন্দেহে এই দুই ক্ষেত্রেই গবেষণার ভূমিকা মূলভিত্তি, এবং শিক্ষা হচ্ছে সেই দুটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বের ভিত্তি যার মাধ্যমে দক্ষতা গঠিত হয় ও নতুন চিন্তা জন্ম নেয়।

গবেষণা-সহযোগী উপপরিচালকদের অঘোষিত দ্বিতীয় দায়িত্ব

আয়াতুল্লাহ আরাফি গবেষণা-সহযোগী উপপরিচালকদের উদ্দেশে বলেন: আপনারা গবেষণা-উপপরিচালক হিসেবে, যেমন আত্মশুদ্ধি বিভাগের উপপরিচালকের দুটি বড় দায়িত্ব থাকে, তেমনি আপনারাও দুটি কাজের ভারে নিয়োজিত।
প্রথমটি হলো সরাসরি প্রশাসনিক কাজ-যেমন গবেষণা কেন্দ্র পরিচালনা, গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, "বছরের সেরা বই" পুরস্কার, "আল্লামা হিল্লি উৎসব" ইত্যাদি কার্যক্রমের সহায়তা।
এই দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর পাশাপাশি আপনাদের একটি অঘোষিত এবং গৌণ মিশন রয়েছে-যা হয়তো দায়িত্বের তালিকায় স্পষ্ট নয়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে প্রথমটির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন।

গবেষণাভিত্তিক শিক্ষার দিকে অগ্রসর হওয়া প্রয়োজন

হাওজার উচ্চ পরিষদের সদস্য বলেন: এই গৌণ মিশনটি হচ্ছে শিক্ষা, প্রাদেশিক কেন্দ্র ও প্রধান দপ্তরের সব কাঠামোতে গবেষণার সংস্কৃতি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠা করা।
অর্থাৎ তিনটি স্তরেই গবেষণাভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি দৃঢ়ভাবে প্রয়োগ করতে হবে।
অন্যভাবে বললে, শিক্ষাকে গবেষণাভিত্তিক করতে হবে।

হাওজার পরিচালক যোগ করেন: গবেষণা-উপপরিচালকদের সাফল্যের মূল শিল্প হলো-অন্যান্য বিভাগ ও সহকারী দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ এগিয়ে নেওয়া, এবং ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় অবিচল থাকা, যাতে আমরা গবেষণামুখী শিক্ষাব্যবস্থার বাস্তব রূপ দেখতে পাই।

তিনি আরও বলেন: আল্লাহর কৃপায়, হাওজার শিক্ষা ও গবেষণা-উভয় উপপরিচালকই এই দুই ক্ষেত্রে সফল অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। আমরা আশা করি যে, পারস্পরিক সহযোগিতা ও দ্বিগুণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে, শিক্ষাগত ও গবেষণাগত ক্ষেত্রে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো-শিক্ষা ও গবেষণার মধ্যে দৃঢ় সংযোগ ও একীভূত সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা।

হাওজার উচ্চ পরিষদের সদস্য আরও বলেন: সাধারণত গবেষণা অন্যান্য ক্ষেত্রের তুলনায় বেশি অবহেলিত থাকে, যদিও আমরা জানি এটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয়।

যখন প্রচার কার্যকর ও সফল হয়, তখনই তা গবেষণার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে থাকে

আয়াতুল্লাহ আরাফি তাঁর বক্তব্যের অন্য অংশে বলেন: অগ্রসর ও আদর্শ হাওজা নীতিমালায় সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশনা ও প্রত্যাশার আলোকে দেখা যায়-প্রচারমূলক কাজেও বৈজ্ঞানিক ও গবেষণাধর্মী কার্যক্রমের গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রচার তখনই প্রভাবশালী ও সফল হয়, যখন এর পেছনে শক্তিশালী গবেষণার ভিত্তি থাকে।

হাওজার পরিচালক জোর দিয়ে বলেন: প্রচারের গুরুত্ব যতই বেশি হোক না কেন, গবেষণার সক্রিয় ভূমিকা ছাড়া তা ফলপ্রসূ হয় না।
সুতরাং, গবেষণা ক্ষেত্রের দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার পাশাপাশি, আজকের বিশ্বে চিন্তার উৎপাদন ও বিকাশের গুরুত্ব কখনও উপেক্ষা করা উচিত নয়।

আয়াতুল্লাহ আরাফি আরও বলেন: আজকের যুগে জ্ঞানবিজ্ঞান (Cognitive Science) ও আধুনিক প্রযুক্তি — বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) — এর গুরুত্ব অপরিসীম।
দশ বছর আগেও প্রযুক্তি গবেষণার একটি সহায়ক সরঞ্জাম ছিল; কিন্তু এখন তা নিজেই এক ধরনের জ্ঞানবিজ্ঞানের রূপ নিয়েছে, যা প্রতিদিনই পৃথিবীতে আরও গভীর প্রভাব ফেলছে।
অতএব, আমাদের উচিত এই নতুন সৃজনশীল শক্তিকে সঠিকভাবে চেনা এবং জ্ঞানমূলক ক্ষেত্রগুলোতে এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha