পার্সটুডের বরাতে হাওজা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, আগামী ৯ এপ্রিল মস্কো বুক হাউসে ইরানের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আয়োজনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। বিখ্যাত রুশ লেখক অ্যালেগ রয়ের রচিত ২৮৫ পৃষ্ঠার এই বইটিতে সোলাইমানির কৈশোর জীবন থেকে শুরু করে ২০২০ সালে মার্কিন হামলায় শাহাদাতবরণ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো বিবৃত হয়েছে। বইটি রাশিয়ার খ্যাতনামা প্রকাশনা সংস্থা ভেচ দ্বারা গত জানুয়ারিতে প্রকাশিত হয়েছে।
লেখকের উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপট:
অ্যালেগ রয়, যিনি ৯০টিরও বেশি উপন্যাসের রচয়িতা এবং রাশিয়ার শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যিক ব্যক্তিত্বদের একজন, বইটি লেখার পেছনে দুটি মূল উদ্দেশ্য উল্লেখ করেছেন। প্রথমত, পশ্চিমা গণমাধ্যমের বিকৃতির বিপরীতে সোলাইমানির বাস্তব চরিত্র ও আদর্শকে রুশ পাঠকদের কাছে তুলে ধরা। দ্বিতীয়ত, ইরান ও রাশিয়ার মধ্যে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বন্ধন শক্তিশালী করা। রয়ের মতে, “ইরানি ও রুশ জনগণের মূল্যবোধ, ঐতিহ্য ও শত্রুরা এক—এ সত্য প্রকাশ করাই এই গ্রন্থের লক্ষ্য।”
সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব: বইটির মাধ্যমে রয় ইরান-রাশিয়া সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনে আশাবাদী। তিনি মনে করেন, বহুমেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব গঠনে সোলাইমানির আদর্শ একটি প্রেরণা। বইয়ের একাংশে তিনি লিখেছেন, “সোলেইমানি শুধু ইরানের নন, বিশ্বের সকল স্বাধীনতাকামীর প্রতীক। তার স্বপ্নের বহুমেরু বিশ্বে আমাদেরও ভূমিকা রয়েছে।” ইরানের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি মাসুদ আহমেদভান্দের সঙ্গে আলোচনায় রয় জোর দেন যে, ইরানি ও রুশদের মধ্যে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক শ্রদ্ধাবোধের মেলবন্ধন গড়ে উঠছে।
শাহাদাত পরবর্তী প্রাসঙ্গিকতা: গ্রন্থের ‘লেখকের মন্তব্য’ অংশে অ্যালেগ রয় উল্লেখ করেছেন, সোলাইমানির মৃত্যু সত্ত্বেও তার প্রভাব আজও প্রবল। মার্কিন হামলার পরও সোলেইমানির আদর্শ শত্রুদের ভীত করে রাখে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বইটির শেষাংশে রয় লিখেছেন, “সোলেইমানি শাহাদাত বরণ করেছেন, কিন্তু তার স্বপ্ন—‘একটি ন্যায়ভিত্তিক বিশ্ব’—জীবিত আছে।” রাশিয়ায় ইরানের সাংস্কৃতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে এই বই প্রকাশ শুধু সাহিত্যিক ঘটনা নয়, বরং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
আপনার কমেন্ট