মঙ্গলবার ৮ এপ্রিল ২০২৫ - ২১:১২
ইরান আত্মসমর্পণ নয়, গুরুতর আলোচনা চায়

তেহরানে যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত স্যার রিচার্ড ডাল্টন বলেছেন, ইরান আসন্ন আলোচনাগুলোকে আত্মসমর্পণের প্রস্তাবনা নয়, বরং আমেরিকার সিরিয়াসনেসের পরীক্ষা হিসেবে দেখছে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: বিবিসি নিউজনাইটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২০০৩ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তেহরানে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী ডাল্টন ব্যাখ্যা করেন, ইরান যেকোনো আলোচনাকে আমেরিকার সদিচ্ছার পরীক্ষা হিসেবেই মূল্যায়ন করে।

তিনি বলেন, “আমেরিকা ইরানের কাছ থেকে তিনটি ক্ষেত্রে দ্রুত আত্মসমর্পণ চাইছে বলে মনে হচ্ছে,”—এ কথা বলার পাশাপাশি পরমাণু সমৃদ্ধকরণ, ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন ও আঞ্চলিক প্রভাবকে মূল বাধাগুলো হিসেবে চিহ্নিত করেন। 

স্যার রিচার্ড বলেন, “ইরান আত্মসমর্পণের জন্য প্রস্তুত নয়। বরং তারা গুরুতর আলোচনায় আগ্রহী।”

মঙ্গলবার সকালে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি ঘোষণা দেন যে শনিবার ওমানে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি একে আমেরিকার জন্য “একটি সুযোগ ও পরীক্ষা” বলে অভিহিত করেন। 

এদিন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে গিয়ে আরাকচি বলেন, “আমার মতে, আলোচনার কাঠামো প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, তা মুখ্য নয়। আসল বিষয় হলো আলোচনা কার্যকর হবে কি না! মূল হলো পক্ষগুলোর সিরিয়াসনেস, তাদের অভিপ্রায় এবং চুক্তিতে পৌঁছানোর ইচ্ছা।”

পরোক্ষ আলোচনা বেছে নেওয়ার কারণ উল্লেখ করে ইরানের এই শীর্ষ কূটনীতিবিদ বলেন, “এই পদ্ধতি বেছে নেওয়ার কারণ হলো—চাপের মাধ্যমে তাদের শর্ত চাপিয়ে দেওয়ার যে আলোচনা, তা প্রকৃতপক্ষে একতরফা দাবি। আমরা এই পদ্ধতিতে বিশ্বাস করি না। পরোক্ষ আলোচনাই বাস্তব ও ফলপ্রসূ সংলাপ নিশ্চিত করতে পারে। আমরা এভাবেই এগোব।” 

আরাকচি জোর দিয়ে বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ইতিহাসে বহুবার এই ধরনের আলোচনা হয়েছে। কিছু দেশ ঐতিহাসিক বা অন্যান্য কারণে প্রত্যক্ষভাবে আলোচনায় বসতে চায় না। আমাদের ও আমেরিকার মধ্যকার এই ইস্যুতে ওমান মধ্যস্থতাকারী। ওমানের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে, কারণ তাদের সাফল্যের রেকর্ড ভালো। আমরা আশা করি, অপর পক্ষ থেকে কূটনৈতিক সমাধানের সিরিয়াস ইচ্ছা দেখতে পাব।”

তিনি স্পষ্ট করেন, “বর্তমানে আমরা পরোক্ষ আলোচনাই পছন্দ করছি এবং এটিকে প্রত্যক্ষে রূপান্তর করার কোনো পরিকল্পনা নেই। আমাদের মতে, প্রত্যক্ষ আলোচনা এই প্রক্রিয়ার জন্য সহায়ক হবে না।”

আলোচনায় তেহরানের লক্ষ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, “ইরানি জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারই আমাদের মূল লক্ষ্য।” 

আসন্ন আলোচনায় কোনো পূর্বশর্ত আছে কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “কোনো পূর্বশর্তই আমরা মানি না।”

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha