হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, মরহুম শেইখ মুফিদ তাঁর ঐতিহাসিক গ্রন্থে কারবালার হৃদয়বিদারক ঘটনার একটি গভীর মুহূর্ত তুলে ধরেছেন। তিনি বর্ণনা করেন, ইমাম হুসাইন (আ.) যখন তাঁর সাথীদের সামনে ইতমামে হুজ্জত (যুক্তি ও দায়িত্বের চূড়ান্ত পরিপূর্ণতা) করলেন, তখন তিনি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন: "আমি তোমাদের অনুমতি দিচ্ছি, তোমরা সবাই চলে যেতে পারো।"
এ যেন ছিল শেষবারের মতো ভালোবেসে বিদায় দেওয়া। হুসাইন (আ.) চাচ্ছিলেন, কেউ যেন বাধ্য হয়ে তাঁর পাশে মৃত্যুর মুখোমুখি না হয়।
কিন্তু এই ডাকের জবাবে এক সাহসী ও অনন্যপ্রাণ সাথী মুসলিম ইবনে আওসাজাহ দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানালেন। তাঁর কণ্ঠে ছিল ঈমান, ভালোবাসা ও অটল প্রতিজ্ঞার অগ্নিঝরা ভাষা: "আমরা কি আপনাকে ছেড়ে চলে যাব? কাল কিয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে কী জবাব দেব?"
"হে রাসূলুল্লাহর পুত্র! আমি আমার এই তলোয়ার ও বর্শা দিয়ে তাদের বুক বিদ্ধ করব।
এই তরবারি দিয়ে শত্রুদের টুকরো টুকরো করে ফেলব।
আর যদি আমার অস্ত্র ভেঙে যায়, তবুও আমি পাথর তুলে যুদ্ধ করব।"
এরপর মুসলিম ইবনে আওসাজাহ এমন এক যুগান্তকারী শপথ করলেন, যা ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবে: "আল্লাহর কসম! যদি আমি জানি যে আমাকে হত্যা করা হবে, তারপর জীবিত করা হবে, এরপর আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে ছড়িয়ে দেওয়া হবে,
এবং এই প্রক্রিয়া আমার সঙ্গে ৭০ বার করা হয়, তবুও আমি আপনাকে কখনো ছেড়ে যাব না। আমি এই পথ থেকে সরে আসব না।"
এই বক্তব্য শুধু মুসলিম ইবনে আওসাজাহর নয়, বরং কারবালার প্রতিটি প্রকৃত সাথীর অন্তরের প্রতিধ্বনি। তাঁদের অটল ঈমান, ইমামপ্রেম, এবং সত্যের জন্য জীবন উৎসর্গের এই চিত্র বিশ্ব ইতিহাসে এক অভূতপূর্ব মানবিক মহাকাব্য রচনা করেছে।
কারবালা শুধু একটি যুদ্ধ নয় — এটি ভালোবাসা, ন্যায়, এবং আত্মত্যাগের চিরন্তন প্রতীক।
আপনার কমেন্ট