মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর ২০২৫ - ০৯:১৩
জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় শত্রুর সঙ্গেও আলোচনায় বসতে বাধ্য লেবানন: লেবাননের প্রেসিডেন্ট

লেবাননের প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন বলেছেন, জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ ও বর্তমান সংকট নিরসনের জন্য তাঁর দেশ এখন কেবল একটিই পথের সামনে দাঁড়িয়ে আছে, আর তা হলো— ইসরায়েলি শত্রুর সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসা।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: আল-মায়াদিন টেলিভিশনকে দেওয়া এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট আউন বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে লেবানন বাধ্য যে সংলাপের পথ বেছে নেবে। আলোচনা তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা শত্রুর সঙ্গে হয়, বন্ধুর সঙ্গে নয়। বন্ধুর সঙ্গে আলোচনার জন্য কোনো মধ্যস্থতা বা সমঝোতার প্রয়োজন পড়ে না; কিন্তু শত্রুর সঙ্গে আলোচনাই পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শান্তির পথ প্রশস্ত করতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যুদ্ধের ভাষা দেখেছি এবং জানি, তা লেবাননের উপর কতটা ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। আজ, আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় আমরা কূটনীতি ও সংলাপের ভাষারই বেশি প্রয়োজন অনুভব করছি— যে ভাষায় নবীহ বেরি থেকে নোয়াফ সালাম পর্যন্ত সকলে আস্থা রাখেন।”

আউন উল্লেখ করেন, তিনি নিজেকে কোনো পেশাদার রাজনীতিক মনে করেন না, বরং “দেশের সেবায় নিয়োজিত এক নাগরিক” মনে করেন। তাঁর ভাষায়, “কেউ কেউ মনে করেন লেবানন তাদের ব্যক্তিগত সম্পত্তি; কিন্তু আমি নিজেকে লেবাননের অন্তর্ভুক্ত মনে করি, লেবাননকে আমার সম্পত্তি নয়।”

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্তে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে। যদিও ২০২৪ সালের শেষ দিকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল, তবুও ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা দক্ষিণ লেবাননে প্রায় প্রতিদিনই অব্যাহত রয়েছে।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র লেবানন সরকারকে চাপ দিচ্ছে যেন হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার পদক্ষেপ নেয়— যা হিজবুল্লাহ ও তাদের রাজনৈতিক মিত্রদের কঠোর বিরোধিতার মুখে পড়েছে।

এর আগে ইসরায়েলি যুদ্ধমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ হুমকি দিয়েছিলেন যে, তেলআবিব হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে হামলা আরও জোরদার করতে পারে।

তবে প্রেসিডেন্ট জোসেফ আউন ইসরায়েলকে অভিযুক্ত করে বলেন, “তারা আলোচনার আহ্বানে সাড়া না দিয়ে বরং হামলা বাড়িয়ে যাচ্ছে।”

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েল ২০২৪ সালের ১ অক্টোবর থেকে লেবাননে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে এবং দুই মাস পর (২৭ নভেম্বর)যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী, ইসরায়েলি সেনাদের ৬০ দিনের মধ্যে দক্ষিণ লেবানন ত্যাগ করার কথা থাকলেও, তারা পাঁচটি কৌশলগত ঘাঁটি থেকে এখনো সরে যায়নি। যুদ্ধবিরতির পর থেকে ইসরায়েলি সেনারা হাজারবারেরও বেশি সেই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha