হাওজা নিউজ এজেন্সি: ‘দোয়ার গল্প’ বইটি পাঠকদের গল্পের প্রতি কৌতুহল ও আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে রচনা করা হয়েছে। এতে দোয়া সম্পর্কিত বিভিন্ন শিক্ষণীয় ঘটনা সংকলিত হয়েছে, যা আমরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করব।
দোয়া করার সঠিক পদ্ধতি
নবী করীম (সা.)-এর একজন সাহাবি নিয়মিত জামাতের সাথে নামাজ পড়তে মসজিদে আসতেন। একদিন নবীজি (সা.) লক্ষ্য করলেন যে তিনি কয়েকদিন ধরে অনুপস্থিত। সাহাবায়ে কেরামকে জিজ্ঞাসা করলেন, “অমুক ব্যক্তি কেন জামাতে শরিক হচ্ছেন না?”
সাহাবিরা জানালেন, “সে অসুস্থ।”
নবী করীম (সা.) তাকে দেখতে গেলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন, “কী হয়েছে তোমার?”
সাহাবি বললেন, “আমি একদিন মাগরিবের নামাজের পর এই দোয়া করেছিলাম: ‘হে আল্লাহ! যদি আমি গুনাহগার হই এবং আখিরাতে আমার শাস্তি নির্ধারিত থাকে, তাহলে দুনিয়াতেই তা দিয়ে দাও।' এরপর থেকেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি।
নবী করীম (সা.) বললেন, “এভাবে দোয়া করা ঠিক নয়। বরং এভাবে বলো,
رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ.
(হে আমাদের রব! আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ দান করুন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। - সূরা বাকারা: ২০১)
এরপর নবীজি (সা.) তার জন্য দোয়া করলেন এবং আল্লাহর রহমতে সে সুস্থ হয়ে উঠল।
সূত্র: বিহারুল আনওয়ার, খণ্ড- ৮১, পৃষ্ঠা- ১৭৪
সংক্ষিপ্ত শিক্ষা:
১. দোয়া আল্লাহর কাছে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম, তবে অবশ্যই সঠিক পদ্ধতিতে করতে হবে।
২. দোয়ায় নেতিবাচক শব্দ বা প্রার্থনা পরিহার করে ইতিবাচক ও কুরআন-সুন্নাহ সম্মত ভাষায় আল্লাহর কাছে চাইতে হবে।
৩. নবীজি (সা.)-এর শেখানো দোয়া رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণের সর্বোত্তম নমুনা।
৪. আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা লাভের আশা রেখে কখনো নিজের জন্য অকল্যাণ বা শাস্তি কামনা করা উচিত নয়।
৫. অসুস্থতা বা বিপদে ধৈর্য ধারণ করে আল্লাহর সাহায্য কামনা করা ঈমানের দাবি।
সতর্কতা: দোয়ার সময় ভুল শব্দ বা অর্থবহীন আবেগ থেকে সাবধান থাকুন। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, কিন্তু তিনি আমাদের জ্ঞানের সীমার মধ্যেই আমাদের দোয়া কবুল করেন।
আপনার কমেন্ট