রবিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৫ - ১৪:৩৯
আয়াত তাতহিরে হযরত আয়েশা-এর অন্তর্ভুক্ত না হওয়া

"আয়াতে তাতহির" এমন এক গুরুত্বপূর্ণ আয়াত, যা নবী করিম (সা.)- এর পবিত্র আহলে বাইত বা পরিবারের বিশুদ্ধতা ও মর্যাদা নির্দেশ করে।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসলামের ইতিহাসে "আয়াতে তাতহির" এমন এক গুরুত্বপূর্ণ আয়াত, যা নবী করিম (সা.)- এর পবিত্র আহলে বাইত বা পরিবারের বিশুদ্ধতা ও মর্যাদা নির্দেশ করে। এই আয়াতের অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে ইতিহাস ও তাফসিরে বিস্তর আলোচনা হয়েছে।

ইবনে আসাকিরের প্রখ্যাত গ্রন্থ “তারিখে মাদিনা দামিশ্ক”-এর ৪২তম খণ্ডের ২৬০ নম্বর পৃষ্ঠায় ওমায়ের ইবনে জমাই (রহ.)-এর সূত্রে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বর্ণনা পাওয়া যায়। তিনি বর্ণনা করেন যে, হযরত আয়েশা (রহ.) নিজেই এই আয়াতের তাফসির করেছেন এবং ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন—
“আহলে বাইত বলতে বোঝানো হয়েছে রাসুলুল্লাহ (সা.), হযরত আলী (আ.), ফাতিমা (আ.), হাসান (আ.) ও হুসাইন (আ.)—এই পাঁচজনকে।”

হযরত আয়েশা (রা.) বলেন,
“আমি চেয়েছিলাম আমি-ও যেন ওই চাদরের নিচে প্রবেশ করি, যেখানে নবী করিম (সা.) তাঁর আহলে বাইতকে একত্র করেছিলেন। তাই আমি এগিয়ে গেলাম এবং কেবল আমার মাথা ঢোকানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু নবী করিম (সা.) আমাকে অনুমতি দিলেন না—বরং মৃদু কঠোর ভঙ্গিতে বললেন: ‘আয়েশা, সরো। এটি পবিত্রতার পরিধি, এটি পবিত্রতার স্থান, এটি নবুওতের আহলে বাইতের গৃহ।’

এরপর নবী করিম (সা.) স্নেহভরে আরও বলেন: ‘তুমি আমার গৃহে বাস করো, আমার জীবনের অংশ, আমার আহারের সঙ্গী;
আমার ঘরে যারা আছে, তারাও আমার পরিবারের অন্তর্ভুক্ত বটে—
তবে এই আয়াতে (আয়াত তাতহির) যাদের পবিত্রতা ঘোষণা করা হয়েছে, তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নও।’

এই বর্ণনাটি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে, আয়াতে তাতহিরে উল্লিখিত “আহলে বাইত” বলতে নবী করিম (সা.), হযরত আলী (আ.), ফাতিমা (আ.), হাসান (আঃ) ও হুসাইন (আ.)—এই পবিত্র পাঁচজনকেই বোঝানো হয়েছে।

এই ঘটনার মাধ্যমে একদিকে যেমন রাসুলুল্লাহ (সা.)- এর আহলে বাইতের মর্যাদা ও পবিত্রতা উন্মোচিত হয়েছে, অন্যদিকে নবী করিম (সা.)- এর ন্যায়পরায়ণতা, সত্যের প্রতি দৃঢ় অবস্থান এবং আয়াতের ব্যাখ্যায় সুনির্দিষ্টতা ও নিরপেক্ষতাও স্পষ্ট হয়েছে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha